ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে আজ। দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরির আঁতুড়ঘর হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই ডাকসুকে। দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন ডাকসুর নেতৃবৃন্দ। শুধু তাই নয়, ডাকসুতে নির্বাচিতরা বরাবরই দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আসীন হয়েছেন জাতীয় সংসদ, মন্ত্রণালয় বা রাজনৈতিক সংগঠনের উচ্চ পদে।
১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে সর্বশেষ ৩৭ জন ডাকসু সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন, যারা দেশের বড় রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছে বা নিজেই দলের প্রধান হয়েছেন।
ডাকসুর নেতারা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় প্রথমবার স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনও ডাকসুর নেতৃত্বে সম্পন্ন হয়।
১৯২২ সালের ১ ডিসেম্বর কার্জন হলে অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের সভায় ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ১৯২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সংসদের সাধারণ সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ অনুমোদন করলে তা কার্যকর হয়। প্রথমবার ১৯২৪-২৫ সালে সম্পাদক ছিলেন যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, পরের বছর অবনীভূষণ রুদ্র। ১৯২৯-৩০ সালে সম্পাদক নির্বাচিত হন আতাউর রহমান খান।
১৯৫৩-৫৪ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বর্তমান নাম গ্রহণ করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মাহবুবুর জামান যথাক্রমে সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাদের আগে-পরে ১৯৬৩-৬৪ থেকে ২০১৯-২০ পর্যন্ত ডাকসুর সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন রাশেদ খান মেনন, মাহফুজা খানম, তোফায়েল আহমেদ, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারুজ্জামান, সুলতান মনসুর, আমানউল্লাহ আমান ও নুরুল হক নুর। দীর্ঘ সময় ডাকসু নির্বাচন বন্ধ থাকলেও ২০১৯-২০ সালে ফের নির্বাচনের মাধ্যমে নুরুল হক নুর সহসভাপতি এবং গোলাম রব্বানী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
মন্তব্য করুন