শৈশবে মায়ের ইচ্ছায় শিশু একাডেমির আঙিনায় ঢু। সেখানেই ক্লাসিক্যাল ড্যান্সের হাতেখড়ি। তবে নাচে ক্যারিয়ার গড়েননি অদিতি জামান স্নেহা। মায়ের পরবর্তী আশাপূরণে চলে এসেছেন ছোট পর্দায়। তার আগে অবশ্য শিল্পকলায় গান, ভরতনাট্যম ও থিয়েটারে অভিনয়ের তালিম নিয়েছেন স্নেহা। এখন পুরোদস্তুর অভিনয় আর একটু-আধটু নাচ—এ নিয়েই এগোচ্ছেন স্নেহা। তবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হচ্ছে বলে এগোতে হচ্ছে রয়েসয়ে। এসব নিয়েই কালবেলার ক্যামেরার সামনে খানিকটা সময় কাটিয়ে গেলেন স্নেহা।
শৈশবে নাচ-গানে পটু হওয়ায় মাঝেমধ্যেই বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিভিন্ন প্রোগ্রামে পারফর্ম করতেন স্নেহা। সেখান থেকে ডাক পান টিভিসিতে। খুব কম সময়েই চঞ্চল চৌধুরী ও মেহজাবীন চৌধুরীর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করে তাদের স্নেহ কুড়িয়েছেন তিনি।
টিভিসি ছাড়াও মেহজাবীনের পায়ের ছাপ দেখে দেখে আরেকটু এগোতে পেরেছেন স্নেহা। ওয়েব সিরিজ ‘আরারাত’-এ তার সহশিল্পী ছিলেন স্নেহা। এ কারণেই মেহজাবীনকেই নিজের আইকন ভাবছেন এই তরুণী। এরপর বিভিন্ন ধারাবাহিক ও সিঙ্গেল নাটকে নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে যাচাই করে নিচ্ছেন স্নেহা। এই তো চলতি বছর ‘চার চক্কর’ ধারাবাহিকে দর্শক তার অভিনয়ের মুনশিয়ানা দেখেছে। সেই নাটকের সেটেও কালবেলার সঙ্গে এক বিকেল আড্ডা হয়েছিল স্নেহার। এর ঠিক মাস সাতেক পর আরেক দফায় কালবেলাকে নিজের হাল-হাকিকত ব্যক্ত করলেন তিনি। জানালেন, একটা সিনেমার অফার পেয়েছিলেন। কলকাতায় শুট হওয়ার কথা। পাসপোর্ট না থাকায় করা হয়নি। এতে স্নেহা কিছুটা আফসোস করলেন বটে। আবার সামলেও নিলেন নিজেকে। বললেন, কাজটা করতে না পারায় মাঝেমধ্যে আফসোস হয়েছে। বাসা থেকেও দেশের বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। আবার মাঝেমধ্যে মনে হয় যে, ঠিকই আছে। আরও বড় হই, তখন সিনেমা করা যাবে। অনেক সময় জীবনের কিছু সুযোগ হাত ছাড়া করা ভালো।
সিনেমার চরিত্রের বিষয়ে খুঁতখুঁতে থাকা কিছু অভিনেত্রীর স্বভাব। স্নেহাও হাঁটলেন চেনা পথেই।
‘সিনেমার অফার এলে প্রথমে চরিত্রটা দেখব। পছন্দ হলে করব। আমি আসলে প্রেম টাইপের গল্পে কাজ করতে চাই না। নায়িকা হওয়ার ইচ্ছা আমার নেই। অবশ্য আমি মনেও করি না যে নায়িকা হওয়ার মতো গ্ল্যামার আমার আছে। একজন নায়িকাকে সবদিক থেকেই পারফেক্ট লাগবে, কিন্তু আমাকে তেমন লাগে না’, বলেই হাসিতে লুটিয়ে পড়লেন পড়াশোনার পাশাপাশি অভিনয় চালিয়ে যাওয়া এই অভিনেত্রী।
উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী স্নেহা। দুদিন আগেই নিলয়-হিমির জুটিতে শুট হওয়া একটি নাটকে সহশিল্পী হয়ে কাজ করেছেন তিনি। এরপর করেছেন আরেকটি ওভিসি। এ ছাড়া অভিনয় করছেন ‘সিটি লাইফ’ ধারাবাহিকে। তবে এসব নাটক ও ওয়েব সিরিজে স্নেহাকে দেখা যায় কেবল সহ-চরিত্রেই। তাই মূল চরিত্রে কাজের আগ্রহ আছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয় তার কাছে। কিছু্টা সময় নিয়ে বললেন, মূল চরিত্রে কাজের অফার পাচ্ছি, কিন্তু মনের মতো হচ্ছে না দেখে করছি না। অনেক ডিরেক্টরের সঙ্গেই কথা হয়েছে। কিন্তু আরেকটু সময় নিতে চাই আমি। নিজেকে আরও প্রস্তুত করার জন্য সময় নিচ্ছি।
অভিনয় ও পড়াশোনায় ভাগাভাগি হয়ে গেছে স্নেহার ঘড়ির কাঁটা। তবুও শৈশবের আবেগকে এখনো যত্নে রেখেছেন এই অভিনেত্রী। গানের চর্চাটা ওভাবে হয় না, তবে নাচটা চলছে থেমে-থেমে। কিছু নাচের দলের সঙ্গে নাম জড়ানো আছে তার। নাচ, গান ও অভিনয় নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে রহস্য জড়ানো স্বরে স্নেহা উত্তর দেন—ফিউচার প্ল্যানটা আপাতত সিক্রেট। বলা যাবে না।