সম্প্রতি আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে নিট মুনাফায় প্রায় ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যার পরিমাণ ৩৭ মিলিয়ন টাকায় উন্নীত হয়েছে। সরকারি সিকিউরিটিজে তাদের বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত বৃহৎ রিটার্ন এই মুনাফা বৃদ্ধির পেছনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিটি শেয়ারের আয় (ইপিএস) গত বছরের শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ টাকা থেকে বেড়ে ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে শূন্য দশমিক শূন্য ৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি মোট সুদের আয় ১৬ দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার পরিমাণ ২ হাজার ২৮৮ মিলিয়ন টাকা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক নীতিগত সুদের হার বৃদ্ধি এবং উচ্চতর আমানত হারের কারণে অর্থায়ন ব্যয় ২২ দশমিক নয় শতাংশ বেড়েছে।
মোট বিনিয়োগ আয় বছরে ১৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৩৯ মিলিয়ন টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি সিকিউরিটিজ থেকে আয় ২০৮ দশমিক আট শতাংশ বেড়ে ১২৫ মিলিয়ন টাকায় পৌঁছেছে। মোট পরিচালন আয় ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৫৭ মিলিয়ন টাকা এবং পরিচালন মুনাফা ২৬ দশমিক ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে, ৩৭৪ মিলিয়ন টাকায় দাঁড়িয়েছে। কৌশলগত সম্পদ ব্যবস্থাপনা, বাছাইকৃত নিয়োগ এবং পরিচালন দক্ষতার অগ্রগতির ফলে পরিচালন ব্যয়ের বৃদ্ধি মাত্র পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ এ সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব হয়েছে। শেয়ার প্রতি নিট পরিচালন নগদপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে চার দশমিক আট ছয় টাকা হয়েছে, যেখানে গতবছর ছিল মাইনাস ১২ দশমিক তিন নয় টাকা। অপরদিকে নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) শেয়ার প্রতি সামান্য বেড়ে ১৭ দশমিক আট ৩ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত আইপিডিসি’র মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭৯হাজার ৫১১ মিলিয়ন টাকা। এখানে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গ্রাহক আমানত সাত দশমিক আট শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার পরিমাণ ৫৫ হাজার ৭৮৬ মিলিয়ন টাকা। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি নন-ব্যাংক আর্থিক খাতের (এনবিএফআই) আমানত বাজারে প্রায় ১১ শতাংশ অংশীদারিত্ব ধরে রেখেছে। ঋণ ও অগ্রিম প্রদান এক দশমিক এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং বিনিয়োগ পোর্টফোলিও ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হ্রাস পেলেও দৃঢ় অবস্থান ধরে রেখেছে।
এ প্রসঙ্গে, আইপিডিসি ফাইন্যান্স পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিজওয়ান দাউদ সামস বলেন, আমাদের বছরের প্রথম প্রান্তিকের ফলাফল নিঃসন্দেহে সন্তোষজনক, যা আমাদের বহুমুখী ব্যবসায়িক মডেলের স্থিতিশীলতা প্রমাণ করে। যদিও ঋণের চাহিদা কিছুটা কমেছে, তবে ঝুঁকিভিত্তিক বিনিয়োগ ও বিচক্ষণ ব্যয় ব্যবস্থাপনার মধ্যে ভারসাম্য রেখে আমরা এই মুনাফা অর্জনে সক্ষম হয়েছি। আমরা গ্রাহকদের পাশে থাকতে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা অব্যাহত রাখতে বদ্ধ পরিকর।
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির স্থবিরতা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অপ্রদেয় ঋণের ঊর্ধ্বগতির মতো প্রতিকূল অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের মধ্যেও, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের এমন পারফর্ম্যান্সের মূলে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি, আর্থিক শৃঙ্খলা এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সমস্যা সমাধানে কৌশলগত পদ্ধতি অবলম্বন। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ও স্টেকহোল্ডারদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভ্যালু তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মন্তব্য করুন