খুলনার রূপসায় কৃষি ব্যাংকের গেট ও ভল্ট ভেঙে টাকা চুরির মূলহোতা ইউনূস শেখকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৭ আগস্ট) ভোররাতে রূপসা কৃষি ব্যাংক ভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার (১৮ আগস্ট) আসামি ইউনূস শেখকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। সে উপজেলার নিকলাপুর গ্রামের ইনছান শেখের ছেলে।
গ্রেপ্তার ইউনূস শেখ কৃষি ব্যাংক ভবনের ৪র্থ তলায় ভাড়া থাকতেন। এ ছাড়া একই ভবনের নিচতলায় তার একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।
তিনি জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ওয়ার্কশপ মালিক ইউনূসকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে টাকা চুরির কথা স্বীকার করেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত লুট হওয়া সব টাকা উদ্ধার করা যায়নি।
পুলিশ জানায়, ইউনূস পেশায় একজন লেদ মিস্ত্রি, ট্রাকের যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতেন তিনি। লোহা কাটার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি ব্যাংকের ভল্ট ও তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। ভোররাতে ব্যাংকে কোনো নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। তাকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডে নেওয়া হবে।
পুলিশ আরও জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ব্যাংকের তিন নিরাপত্তা প্রহরী এখনো হেফাজতে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হবে।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার ইউনূস প্রচুর পরিমাণে ঋণের টাকার চাপে ছিলেন। ইতোমধ্যে চুরি করা টাকা থেকে কিছু ঋণ পরিশোধও করেছেন তিনি। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশের একটি দল ইতোমধ্যে কিছু টাকা উদ্ধার করেছে।
রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, কৃষি ব্যাংক পূর্ব রূপসা ঘাট শাখার ৬টি তালাসহ ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ টাকা লুট হওয়ার ঘটনায় ইউনূসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। আরও তথ্য জানা এবং লুট হওয়া টাকা উদ্ধারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম আরও জানান, তদন্তে প্রমাণ মিলেছে, এই চুরির ঘটনাটি ইউনূস ঘটিয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ড চাওয়া হবে।
এদিকে ব্যাংক লুটের ঘটনায় কর্তৃপক্ষ দায়িত্বে অবহেলা করেছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য আজ তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিভাগীয় অফিসের ডিজিএম আসলাম হোসেন, এজিএম মশিউর রহমান ও এজিএম হামিম শেখ। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক খুলনার উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে ব্যাংক নিরাপত্তা প্রহরী ব্যাংকে এসে দেখেন মেইন গেটের তালা ভাঙা, এমন অবস্থা দেখে নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কাশেম বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার পুলিশের উপস্থিতিতে লেজার ও ক্যাশ মিলিয়ে দেখেন ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা নেই। এ ঘটনায় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে রূপসা থানায় মামলা করেন।
মন্তব্য করুন