জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে আগামী তিন দিনের মধ্যে অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের (২৯ মে) মধ্যে অপসারণ করার দাবি জানিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
সোমবার (২৬ মে) সংবাদ সম্মেলন করে ঐক্য পরিষদ বলেছে, তিন দিনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে। তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় এই দাবি করা হয়েছে। গত ১২ মে রাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।
এনবিআর বিলুপ্ত করার অধ্যাদেশ বাতিল করার দাবি জানিয়ে চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে কর্মসূচি শুরু করেছে এনবিআর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। গত ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে ঐক্য পরিষদ। পরে সংবাদ সম্মেলনে করে ঐক্য পরিষদ জানায়, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা, নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির ব্যাপকতা ও যৌক্তিকতার বিষয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঠিক তথ্য না দিয়ে আড়াল করেছেন। এ সময় তার অপসারণ দাবি করা হয়।
এতদিন তার অপসারণের দাবি থাকলেও কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি, এবারই প্রথমবার এভাবে সময় দেওয়া হলো। এছাড়াও পূর্বের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি যথারীতি অব্যাহত থাকবে বলেও আজ সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা আশা করি, রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে সরকার কর-রাজস্ব নীতি প্রণয়ন, কর-রাজস্ব আহরণ ও ব্যবস্থাপনায় জ্ঞান, দক্ষতা ও বাস্তব কর্ম-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যান পদে পূর্ণকালীন দায়িত্ব প্রদান করবেন।
গতকাল রোববার রাতে এনবিআর কর্মকর্তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। আর সেই আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ঐক্য পরিষদ। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণের ব্যাপারে কোনো কিছুই জানায়নি অর্থ মন্ত্রণালয়।
ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আশা করে, আগামী ৩১ জুলাই তারিখের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর লক্ষ্যে সরকার খুব শিগগিরই আলোচনা শুরুসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম দৃশ্যমান করবে। তাদের আন্দোলনের মুখে অর্থ মন্ত্রণালয় এখন বলছে, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ওই অধ্যাদেশে সংশোধন করা হবে। এনবিআর, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে বলে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সরকার দাবি মানার আশ্বাসে কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে তাদের এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের দাবি না মানায় নতুন করে সময় বেঁধে দেয় তারা। এছাড়াও এনবিআর সংস্কারে যে পরামর্শক কমিটি করেছিল তাদের সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশের দাবি করা হয়, তা এখনো না মানায় ফের ‘শিগগিরই’ প্রকাশের দাবি করা হয়।
মন্তব্য করুন