রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) রেজিস্ট্রারের রুটিন দায়িত্ব পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মো. নজরুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম ছুটিতে যাওয়ায় তাকে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
সোমবার (২৬ মে) শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ-এর অনুমোদনক্রমে রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে তাকে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
অফিস আদেশক্রমে, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিমের অনুকূলে পবিত্র হজ পালনের নিমিত্ত সৌদি আরব গমনের উদ্দেশ্যে ২৭ মে থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত মোট ৩৩ দিন অথবা প্রকৃত ভ্রমণের তারিখ থেকে ৩৩ দিন পূর্ণগড় বেতনে অর্জিত ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। তার ছুটিকালীন রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মো. নজরুল ইসলাম রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।’
জানা যায়, মো. নজরুল ইসলাম ২০০৬ সালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের একান্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ১৯৮৭ সালে রাজশাহী কলেজে অধ্যয়নকালে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে যোগ দেন। এ সময় তিনি স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী গণআন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
এরপর ১৯৯৪ সালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সদস্যদের সর্বাধিক ভোট পেয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালের ৬ নভেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম অভিমুখী লংমার্চে অংশগ্রহণ করে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েও জাতীয়তাবাদী লড়াই থেকে পিছু না হটে বরং ১৯৯৯ সালে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
মো. নজরুল ইসলাম ছাত্রজীবন শেষ করে পেশাজীবী রাজনীতিতেও জাতীয়তাবাদী আদর্শ ধারণ করেন। তিনি ২০০২ সালে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের ঢাকা মহানগর শাখার ক্রীড়া সম্পাদক পদে জাতীয়তাবাদী কৃষিবিদদের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন।
এরপর ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী কৃষিবিদদের সংগঠন এগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওই দায়িত্ব গ্রহণ করার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের একান্ত সচিবের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, ছাত্র রাজনীতি ও পেশাজীবী রাজনীতিতে আমি সর্বদা জাতীয়তাবাদী আদর্শ সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেছি। এমনকি যখন আওয়ামী দুঃশাসনে অনেকেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি থেকে পিছপা হয়েছে, তখন ২০২২ সালে আমি জাতীয়তাবাদী কৃষিবিদদের সংগঠন এগ্রিকালচারিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করি। ফলস্বরূপ আমাকে উপাচার্যের একান্ত সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘আমাকে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রারের রুটিন দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। আমি আমার সততা, দক্ষতা ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে কাজ করব।’
এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে মো. নজরুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়ায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী আদর্শের সবাই উচ্ছ্বসিত।
মন্তব্য করুন