কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
আপডেট : ২৭ মে ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
এনডিটিভির প্রতিবেদন

লালমনিরহাটে বিমানবন্দর চালু নিয়ে চিন্তায় ভারত

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

বাংলাদেশের লালমনিরহাটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার পরিত্যক্ত বিমানবন্দর পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা ভারতের কপালে ভাঁজ ফেলেছে।

দেশটির এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ যদি এই বিমানবন্দর চীনের সহযোগিতায় চালু করে, তাহলে ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ হিসেবে ত্রিপুরার কৈলাশহর বিমানঘাঁটি পুনরায় সচল করবে ভারত।

মঙ্গলবার (২৭ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির বিশেষ প্রতিনিধি রত্নদ্বীপ চৌধুরীর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের সম্ভাব্য সহযোগিতায় লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালুর খবরে ভারতের প্রশাসনে সতর্কতা সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, ভারত মনে করছে—এই বিমানবন্দরটিতে চীনের সামরিক অবকাঠামো গড়ে উঠতে পারে, যা ভারতের ‘চিকেন নেক’-এর খুব কাছেই অবস্থিত। এই অঞ্চল ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে, যার কৌশলগত গুরুত্ব অপরিসীম।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, বিমানবন্দরটি শুধু প্রয়োজনের ভিত্তিতে সচল করা হচ্ছে এবং কোনো চীনা সংস্থা এতে যুক্ত কিনা—সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। সেনাসদরে সোমবার এক ব্রিফিংয়ে মিলিটারি অপারেশন্স অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা এ তথ্য জানান।

তবে এনডিটিভি দাবি করেছে, ভারত আশঙ্কা করছে—চীনের সহায়তায় সেখানে যুদ্ধবিমান, রাডার এবং নজরদারি সরঞ্জামসহ সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন হতে পারে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারত ত্রিপুরার ৩২ বছর পরিত্যক্ত কৈলাশহর বিমানঘাঁটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।

২৬ মে ওই ঘাঁটিতে ভারতীয় এক প্রতিনিধি দল পরিদর্শনে যায় এবং ঘাঁটির বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করে। তারা জানায়, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ত্রিপুরার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ত্রিপুরা টাইমেসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করতে এয়ারপোর্টস অথোরিটি অব ইন্ডিয়ার একটি উচ্চ পর্যায়ের দল অবকাঠামো ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছে। এতে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই পদক্ষেপ শুধু বাংলাদেশের উদ্যোগের জবাব নয়, বরং শেখ হাসিনার পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েনের প্রতিক্রিয়াও হতে পারে। এনডিটিভি জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে ভারত দীর্ঘদিন ধরে ‘মূল্যবান মিত্র’ হিসেবে দেখেছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের নীতিতে চীন ও পাকিস্তানের প্রতি ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত থাকায় ভারতের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

সব মিলিয়ে, বাংলাদেশের লালমনিরহাট বিমানবন্দর পুনরায় চালুর পরিকল্পনা এবং ভারতের পাল্টা প্রস্তুতি দক্ষিণ এশিয়ায় ভূরাজনৈতিক টানাপড়েন আরও ঘনীভূত করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। উভয় দেশ যদি এই বিষয়ে কূটনৈতিকভাবে সমাধানে না আসে, তবে এটি দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভারতের রাফাল ভূপাতিতে নড়েচড়ে বসল ফ্রান্সের সেনাবাহিনী

সচিবালয়ের কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি

সাগরে নিম্নচাপ, কলাপাড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

তাজউদ্দীন কলেজের নাম পরিবর্তন নিয়ে সোহেল তাজের স্ট্যাটাস

‘বিষপান করা’ সেই চার জুলাই যোদ্ধাকে বিএনপির আর্থিক সহায়তা

লক্ষ্মীপুরে হত্যাসহ ২০ মামলার আসামি গ্রেপ্তার 

গাছের সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা, রক্ষা পেল কালনী এক্সপ্রেস

ঢাবি সাদা দল  / ‘তারেক রহমান খালাস পাওয়ায় প্রমাণিত হলো হাসিনার আমলের সকল মামলা মিথ্যা’

আমাদের শান্তিরক্ষীরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত: সেনাপ্রধান

১০

নেতানিয়াহুকে ইরানে হামলা করতে না করেছি : ট্রাম্প

১১

ভুল স্বীকার করলেন হান্নান মাসউদ 

১২

সুব্রত বাইনকে ভারত থেকে পাঠানোর পেছনে রাজনৈতিক গুপ্তহত্যার ছক!

১৩

আসাম, মিজোরাম ও ত্রিপুরায় রেড অ্যালার্ট

১৪

এক লাখ শ্রমিক নেওয়ার পরিকল্পনা জাপানের : প্রেস সচিব

১৫

কুবিতে সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রদলের একাংশের হামলার অভিযোগ

১৬

দিন-দুপুরে মগবাজারে দুর্ধর্ষ ছিনতাই, ৩ জন গ্রেপ্তার

১৭

বিসিবি সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগের বিষয়ে যা বললেন ফারুক

১৮

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে কে কত ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে

১৯

ইশরাকের মেয়র পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন : আপিল বিভাগ

২০
X