চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।
মো. মাহমুদুল হোসাইন বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ’ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ ও মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৬ টাকা।
কর্ণফুলী টানেলের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি ‘মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের (চবক অংশ) আওতায় পরামর্শক ব্যয় ও ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সিসিজিপি সভায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে এসএমইসি এবং সিওডব্লিউআই-কে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৪ টাকায় নিয়োগের চুক্তি করা হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ৫ বার বাড়ানো চুক্তির মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়।
এদিকে, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট (সিএসএডব্লিউএম) প্রপেক্ট’-এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে ডিভনকন, ডিএসইচভি, একিউইউএ, ইপিসি এবং আইডব্লিউএম-কে নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫০ টাকা। এ ছাড়া ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পে নতুন করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ২৮ কোটি ৮ লাখ ৫ হাজার ২৮৪ টাকা।
প্রসঙ্গত, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত মূল সুড়ঙ্গপথের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। দেশের প্রথম নদীর তলদেশের সুড়ঙ্গপথ এটি। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই টানেলে দুটি টিউব বা সুড়ঙ্গ রয়েছে। একটি পথ গেছে নগরের পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা প্রান্তে। আরেকটি এসেছে আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গা প্রান্তে। প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। প্রতিটি প্রস্থে ৩৫ ফুট করে এবং উচ্চতা ১৬ ফুট। প্রতি টিউবে দুটি করে লেন রয়েছে। আর টিউবগুলো অবস্থিত কর্ণফুলী নদীর তলদেশের ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে (সর্বোচ্চ গভীরতা ১০১ ফুট)। টিউবগুলো একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব ১২ মিটার।
মন্তব্য করুন