অরক্ষিত ডেমরার ডিএনডি খাল। নেই নিরাপত্তা বেষ্টনী। মৃত পচা কুকুর, বিড়ালের পাশাপাশি অর্ধগলিত মানুষের মৃতদেহ ভেসে ওঠে এ খালে। অথচ প্রতিদিন এ খালের ১৫ কোটি লিটার পানি পরিশোধন করে ৪০ লাখ গ্রাহকের মাঝে বিতরণ করে ওয়াসা।
শীতলক্ষ্যা নদীর পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত এ পানিকে পরিশোধনের মাধ্যমে ব্যবহারের উপযোগী করতে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারে (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) পানি জোগান দেওয়ার একমাত্র খাল হচ্ছে ডিএনডি খাল। ডেমরার শীতলক্ষ্যা নদীর সারুলিয়া বাজার এলাকা থেকে যাত্রাবাড়ীর মৃধাবাড়ী পর্যন্ত ৪.৬ কিমি এ খাল ব্যবহার করা হয়। পরে মৃধাবাড়ী থেকে ১.৬ কিমি কালভার্ট বক্সের মাধ্যমে প্রতিদিন ১১ কোটি থেকে ১৫ কোটি লিটার পানি এই ডিএনডি খালের মাধ্যমে সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে যুক্ত করা হয়। পরে এ পানিকে পরিশোধন করে প্রায় ৪০ লাখ নগরবাসীকে সরবরাহ করে ঢাকা ওয়াসা।
সরজমিনে দেখা গেছে, ডেমরার সারুলিয়া বাজার এলাকা থেকে যাত্রাবাড়ীর মৃধাবাড়ী পর্যন্ত এ ডিএনডি খালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই দুর্বল। এলাকাটি অত্যন্ত জনবহুল হওয়ায় ডিএনডির অভ্যন্তরীণ এলাকায় লাখ লাখ মানুষের বসবাস। খালের উভয় পাশেই রয়েছে শহরের সঙ্গে যোগাযোগ সড়ক। এর দক্ষিণ পাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী (ওয়াল) থাকলেও, উত্তর পাশে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী সড়ক ঘেষে পুরোটাই একেবারে খোলা। এটি শহরের ব্যস্ততম সড়ক হওয়ায় এ সড়কটিতে প্রায় সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে কুকুর, বিড়াল নিহত হয়। পরে এসব মৃত কুকুর, বিড়ালসহ অন্যান্য আবর্জনা এ ডিএনডি খালে ফেলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া এ খাল থেকে মানুষের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে।
এ বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি কালবেলাকে বলেন, শীতলক্ষা নদীর পানি এমনিতেই পচা এবং দুর্গন্ধযুক্ত। গুরুত্বপূর্ণ এ খালের উত্তর পাশে সড়কের সাইটে নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকলে প্রবাহিত পানির দূষণ যেমন কমত, তেমনই ডেমরা থানা এলাকায় অপরাধ কিছুটা কমত। খালের উভয় পাশে ওয়াল অথবা লোহার গ্রিল দিয়ে বেষ্টনী অবশ্যই করা দরকার।
এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই এবং পয়ঃনিষ্কাশন অথরিটি (ওয়াসা) সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার কিউএইচএসএসই (কোয়ালিটি হেলথ সেফটি সিকিউরিটি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট) ম্যানেজার কাজী মারুফুল হক কালবেলাকে বলেন, বর্তমানে ডিএএনডি খালের দক্ষিণ পাশের অভ্যন্তরীণ সড়কের পাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলমান আছে। উত্তর পাশে জরুরি ভিত্তিতে লোহার গ্রিল অথবা দেয়াল দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওয়াতায় আনতে আমি আমার ঊর্ধ্বতনদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতনরা বিবেচনা করে দেখবেন। এ ছাড়া এ খালের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ডিএসকে (দুস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র) নামের একটি এনজিও নিয়োজিত রয়েছে।
মন্তব্য করুন