কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাবলেট নিয়ে শিশুকেই অপহরণ, যেভাবে ধরল পুলিশ

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

প্রথমে শিশু আছে এমন বাড়িতে সাবলেট হিসেবে ওঠেন তারা। এরপর শিশুর সঙ্গে সখ্য গড়ে সুযোগ বুঝে অভিভাবকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে করেন অপহরণ। শিশুকে অপহরণের পর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না দিতে চাইলে নির্যাতনের পাশাপাশি হত্যার হুমকিও দেন।

সম্প্রতি কামরাঙ্গীরচরে এমন এক কায়দায়তেই শিশু অপহরণ করেন ফয়সাল ও কাকলী দম্পতি। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এই দম্পতিকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।

জানা যায়, গত ১৯ অক্টোবর কামরাঙ্গীরচরের আলীনগর এলাকার একটি বাসা থেকে চার বছর বয়সী শিশু আব্দুল হাদি নূর নিখোঁজ হয়। দুপুরে ঘুম থেকে উঠে নূরের মা দেখেন, সন্তান পাশে নেই। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তিনি জানতে পারেন, পাশের সাবলেটে থাকা দম্পতিও নিখোঁজ। তাদের ফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানান, শিশুটি তাদের কাছে আছে। তবে কিছুক্ষণ পরই তাদের ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ওই দম্পতি শিশুটিকে নিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। আশপাশে খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে শিশুর মায়ের ইমো নম্বরে পাঠানো একটি ম্যাসেজ পাঠান সেই দম্পতি। ম্যাসেজে জানানো হয়, নূরকে অপহরণ করা হয়েছে এবং তাকে ফিরে পেতে মুক্তিপণ দিতে হবে ১ লাখ টাকা।

শিশুর মা গণমাধ্যমে বলেন, অপহরণকারীরা ইমোতে শুধু ম্যাসেজে কথা বলছিল, কিন্তু ফোন ধরছিল না। তারা ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে, না দিলে ছেলেকে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ারও হুমকি দেয়।

কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে পরিবারটি প্রথমে অপহরণকারীদের কাছে ৫ হাজার টাকা পাঠায়। এরপর শিশুকে না পেয়ে তারা পুলিশে অভিযোগ করেন। দুই দিন ধরে চেষ্টার পর তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে অপহৃতের অবস্থান মিরপুরে শনাক্ত করা হয়। সেখান থেকে ফয়সাল ও কাকলী দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, সেই সঙ্গে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় নূরকে।

জানা যায়, দম্পতিটি ১৫ দিন আগে আলীনগরের ওই বাসায় সাবলেট হিসেবে ওঠে এবং নূরের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। পরে শিশুর মায়ের ঘুমের সুযোগ নিয়ে চিপসের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে অপহরণ করা হয়।

ডিএমপির কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম বলেন জানায়, এই দম্পতি নিয়মিত বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে ভাড়া থাকত এবং সেখান থেকেই পরবর্তী টার্গেট নির্ধারণ করত। এরপর কোনো বাসায় সাবলেট হিসেবে উঠে শিশু অপহরণ করে হোটেলে আটকে রাখত। মুক্তিপণ না পেলে শিশু বিক্রিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তিনি আরও জানান, অপহরণকারীদের কাছে ১৫-২০টি সিম পাওয়া গেছে। এগুলোর একটিও তাদের রেগুলার ব্যবহারের সিম নয়। তারা মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত কিনা, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছে, সাবলেট দেওয়ার আগে অবশ্যই ভাড়াটিয়াদের পরিচয়পত্র যাচাই এবং তাদের পেশা ও উৎস যাচাই করা জরুরি, যাতে এই ধরনের অপরাধ থেকে পরিবারগুলো সুরক্ষিত থাকে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল : দুলু

সীমান্তে চীন-রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের দাপট, কী করবে জাপান

১৩ মাস পর ৬ জেলের কারামুক্তি, আবেগাপ্লুত স্বজনরা

আটা-ময়দা ফর্টিফিকেশন : অনুপুষ্টির অভাব দূরীকরণের এক সময়োপযোগী পদক্ষেপ

মসজিদের দানবাক্সের তালা কেটে টাকা চুরি

বিপিএল : আরও এক বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে ভেড়াল ঢাকা

ট্রেনে কাটা নয়, পরিকল্পিত হত্যা

পদত্যাগ প্রশ্নে যা বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় উদ্বোধন বৃহস্পতিবার

ব্রাকসু নির্বাচনের তপশিল ফের স্থগিত

১০

বেগম রোকেয়া পদক পেলেন ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা

১১

চট্টগ্রামে ৯ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা, রাউজানে মহিউদ্দিন জিলানী

১২

ড্রেসিং করা হাঁস-মুরগি খাওয়া কি জায়েজ? যা বলছে ইসলাম

১৩

ফুটবলে সবকিছুই দ্রুত পরিবর্তন হয় : জাবি আলোনসো

১৪

তপশিল ঘোষণার সময় নিয়ে আলোচনা চলছে : ইসি সচিব

১৫

পর্ন সাইটে দৃশ্য ছড়িয়ে পড়া নিয়ে অভিনেত্রীর ক্ষোভ

১৬

যুবদলের ২ নেতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি

১৭

মাঝ আকাশে জ্ঞান হারালেন নীলম কোঠারি

১৮

‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে চাঁদা দাবি, হাতেনাতে গ্রেপ্তার ১

১৯

দেশে মানবাধিকারের ৩ সংকট

২০
X