রাত পোহালেই আগামীকাল ঈদুল আজহার। ইতিমধ্যে রাজধানীর সব পশুর হাটগুলোতে বেঁচাবিক্রি শেষ করে বাড়ি চলে গেছেন পরিবারের কাছে। আবার অনেকে বাড়ি ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন সারা দেশ থেকে গরু বিক্রি করতে আসা খামারি ও ব্যবসায়ীরা। তবে অনেকে শেষ মুহূর্তে পশু বিক্রির আশায় এখনো রাজধানীর বিভিন্ন হাটে রয়েছেন। তারা তাদের পশুগুলোকে সাজিয়ে গুছিয়ে শেষ মুহূর্তে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন। ক্রেতাদের নজর কাড়তে পশুগুলোকে আকর্ষণীয় করে সাজাচ্ছেন বিক্রেতারা। হাটে আনা অধিকাংশ গরুর গলায় মালা ও ঘণ্টা দেখা গেছে। গায়ে জড়ানো হয়েছে কারুকার্যময় জরি ও কাপড়।
রোববার (১৬ জুন) ধোলাইখাল পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, পশু সাজানোর নানা উপকরণের পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনেক দোকানি। দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে রঙিন কাপড়, জরির মালা, মাথায় ও শিঙে পরানোর রঙিন মুকুট, গলায় ও পায়ে পরানোর ঘুঙুরসহ রঙিন দড়ি ও বিভিন্ন ধরনের লাঠি। ফেরি করেও বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন উপকরণ। প্রকারভেদে একেকটি ঘণ্টার দাম ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। মালার দাম ২০ থেকে ৬০ টাকা। লাঠির দাম ২০ টাকা।
চট্টগ্রামের আড়াই হাজার থেকে কোরবানির হাট উপলক্ষে রাজধানীতে এসেছেন মালা ও ঘণ্টা বিক্রেতা তাজুল ইসলাম। তিনি পেশায় একজন কৃষি শ্রমিক। বছরের এই সময় কোরবানির হাট গুলোতে গরুকে সাজানোর জন্য বাহারি সব মনহারির জিনিস পত্র বিক্রি করেন। কোরবানিকে কেন্দ্র করে প্রায় ১৬ বছর ধরে তিনি দেশের বিভিন্ন হাটগুলোতে গরুর জন্য মালা ঘণ্টা ও জরির মুকুট বিক্রি করেন।
তিনি বলেন, হাটে বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও আসে। তাদের ইচ্ছা, পছন্দের পশুটিকে সাজিয়ে নিয়ে ঘরে ফেরা। তাই এ সময় পশু সাজানোর উপকরণ বিক্রি হয়। তাজুল আরও বলেন, ‘গরুর ব্যাপারীরা ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে গরুর জন্য মালা, ঘণ্টা কেনেন। পাশাপাশি ক্রেতারাও গরু সাজিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান। এজন্য তারাও মালা কেনেন।’
কুষ্টিয়া থেকে গরু নিয়ে আসা মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘ঈদের সময় বিভিন্ন রঙের কাগজ ও কাপড়ের মালা দিয়ে গরু সাজানো হয়ে থাকে। শেষ সময় ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই এটা করা হয়।
তাজুলের সঙ্গে গরুকে সাজানোর জন্য দর-দাম করছিলেন পাবনার জয়নাল ব্যাপারী। তিনি কালবেলাকে বলেন, খামার থেকে ৯টি গরু নিয়ে গত সোমবার এসেছিলাম। কিন্তু এখনো তিনটি গরু বিক্রি হয়নি। তাই যদি ওদের একটু সাজালে ক্রেতাদের কাছে পছন্দ হয়। তাই কিছু বাড়তি অর্থ ব্যয় করে গরু তিনটিকে সাজানোর কথা ভাবছি।
মনহারীর সঙ্গে দরদামে পটলে ওদের সাজাব। কপাল ভালো থাকলে রাতের মধ্যেই তিনটি গরু বিক্রি করে বাড়ি ফিরব। তবে ভাগ্য খারাপ হলে গরুগুলোকে বিক্রি না করেই ওদের নিয়ে কাল সকালের আগে বাড়ি ফিরতে হবে।
মন্তব্য করুন