ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। পানি পড়ছে চুইয়ে চুইয়ে। ঝুঁকি এড়াতে ছাদের ওপরে দেওয়া হয়েছে টিনের চালা। সেখানেই বছরের পর বছর ঝুঁকি নিয়ে চলছে ঠাকুরগাঁওয়ের বন বিভাগের কার্যক্রম। ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও নতুন ভবন সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে শহরের হাজির মোড় এলাকায় দুই একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় ঠাকুরগাঁও সামাজিক বনায়ন বিভাগ ও নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। শুরুতে একজন রেঞ্জ কর্মকর্তা, একজন ফরেস্টার, দুজন মালি ও দুজন বন প্রহরী মিলিয়ে সাতটি মঞ্জরি পদের জন্য ৭টি কোয়ার্টার এবং দাপ্তরিক কাজের জন্য একটি কার্যালয় নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে কোয়ার্টারগুলো দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় ধীরে ধীরে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
২০২১-২২ অর্থবছরে দাপ্তরিক অফিসটি পরিত্যক্ত হয়ে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বাসভবন মেরামত করে সেখানে চলছে অফিসের কার্যক্রম। ২০২২ সালে ঝড়ে এ ভবনটিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এরপর ছাদের উপর টিনের চালা দিয়ে দাপ্তরিক কাজ সারছেন বন কর্মকর্তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত সবকটি কোয়ার্টারের জীর্ণদশা। লতা-গুল্ম ও গাছ-গাছালিতে আচ্ছাদিত হয়ে গেছে পুরো এলাকা। এর মধ্যে পাঁচটি টিনসেডের কোয়ার্টারের আবার দরজা-জানালা বলতে কিছু নেই। পোকামাকড়ের আনাগোনা পুরো এলাকায় ও স্যাঁতসেঁতে আবাসিক ভবনগুলো। সব মিলিয়ে যেন একটা ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে এলাকাজুড়ে।
বাগান মালী রমজান আলী বলেন,আমাদের থাকার জন্য একটু ভালো ভবন দরকার। সারাদিন পরিশ্রমের পর সন্ধ্যায় এসে পরিত্যক্ত ঘরে ঝুঁকি নিয়ে থাকতে হয়।
ঠাকুরগাঁও সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিউল আলম মণ্ডল বলেন, এসব কোয়ার্টার অনেক পুরোনো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অফিস করতে হচ্ছে। বিষয়টি দিনাজপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জানানো হয়েছে। শুধু দুটি ভবন ও একটি টিনশেড ঘর মেরামত করা হলেও অন্য ভবনগুলো সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় নতুন করে ভবন নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা তাছলিমা খাতুন কালবেলাকে বলেন, নতুন করে ভবন নির্মাণের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
মন্তব্য করুন