গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মেয়েকে ভর্তি করাতে ঢাকায় এসেছিলেন জামাল, গুলিতেই সব শেষ

নিহত জামাল হোসেন সিকদার। ছবি : সংগৃহীত
নিহত জামাল হোসেন সিকদার। ছবি : সংগৃহীত

মেয়েকে ঢাকার বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজে ভর্তি করানোর জন্য এসেছিলেন জামাল হোসেন সিকদার (৪০)। গত ২০ জুলাই শ্যালক তাওহিদ আহম্মেদকে সঙ্গে নিয়ে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে মার্কেটে যাওয়ার পথে চিটাগাং রোডে দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে আর একমাত্র মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে প্রবাসে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন দিনমজুর জামাল। কিন্তু কোটা আন্দোলনের সহিংসতায় গুলি বিদ্ধ হয়ে নিহত হন জামাল। নিহত জামাল বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পূর্ব হোসনাবাদ গ্রামের মৃত মহসিন সিকদারের ছেলে।

নিহতের স্বজনরা জানান, জামাল ঢাকায় রং মিস্ত্রির কাজ করতেন। ঈদুল ফিতরের সময় বাড়িতে গিয়ে আর ঢাকায় ফেরেননি। পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে আর একমাত্র মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে প্রবাসে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। চলতি মাসেই তার সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে নিহতের স্ত্রী শিউলি আফরোজ কালবেলাকে জানান, আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন জামাল। শুধু ফ্লাইটের তারিখ ঘোষণা বাকি ছিল। ঘটনার দিন বিকেলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের জন্য বের হয়ে প্রবাসের যাওয়ার স্বপ্ন এক গুলিতেই শেষ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, স্বামীর স্বপ্ন ছিল বিদেশ গিয়ে ঋণ পরিশোধ করার পাশাপাশি মেয়েকে লেখাপড়া করিয়ে উচ্চশিক্ষিত করবে। আমাদের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। মেয়ের পড়ালেখা অনিশ্চিত জানিয়ে শিউলি বলেন, মানুষের ঋণ পরিশোধ কীভাবে করব এখন সেই দুশ্চিন্তায় আছি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, নদীভাঙনে স্বামীর বাড়িঘর হারিয়েছি। আর কোটা আন্দোলনের নামে সহিংসতায় স্বামীকে হারালাম। এখন আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাই মুলাদী উপজেলার নাজিরপুরে বাবার বাড়িতে আশ্রয়ে আছি। একমাত্র মেয়ের পড়ালেখার দায়িত্বভার গ্রহণ ও আর্থিক সহায়তা পেতে তিনি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন।

গৌরনদী ইউএনও মো. আবু আবদুল্লাহ খান জানান, খোঁজখবর নিয়ে পরিবারটিকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামী বিদেশি খেলোয়াড় হলেন গ্রিন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় / এবার পাকিস্তানের পতাকার পাশে আঁকা হলো ভারতের পতাকা

বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল সংবাদপত্র, যা প্রকাশিত হয় ৪ বছরে একবার

সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

যে কারণে সরে দাঁড়ালেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি প্রার্থী

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপি প্রার্থী

প্রাণ গেল ওসিসহ ২ পুলিশ কর্মকর্তার

পুলিশ লাইনস লাগোয়া পার্কিংয়ে বাসে আগুন

বিজয় দিবসে জবি শিবিরের ব্যতিক্রমী নৌ র‍্যালি

ওয়াইফাইয়ের গতি কমলে বাড়াবেন যে উপায়ে

১০

বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ঢাকার রাশিয়ান হাউসের

১১

বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারতের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধবীরদের বিনিময় সফর

১২

যুবলীগের দুই নেতা কারাগারে

১৩

জবিতে রাজাকারদের প্রতীকী ছবিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি

১৪

‘সরকার-পুলিশের ওপর নির্ভর করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না’

১৫

মহাসড়কে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ২

১৬

ঝড়ো হাওয়ায় ভেঙে পড়ল ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির’ রেপ্লিকা

১৭

শরীয়তপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরে আগুন, এলাকায় চাঞ্চল্য

১৮

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির আস্ফালনের মধ্যেই বিজয় দিবস, তবু মানুষ প্রস্তুত : প্রিন্স

১৯

চুল পড়া কমান ঘরোয়া উপায়ে

২০
X