ফেনী শহরের মহিপালে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন গুলিতে অটোরিকশাচালক মো. সবুজ নিহতের ঘটনায় সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে নিহত সবুজের ভাই মো. ইউসুফ বাদী হয়ে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ করে কয়েকশজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতন, ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার।
ছাগলনাইয়া আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ছনুয়া ইউপি চেয়ারম্যান করিম উল্যাহ, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশিদ মিলন, শর্শদী ইউপি চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঞা, ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন, পাঁচগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক লিটন, ধলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার আহমেদ মুন্সী, লেমুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ উদ্দিন নাসিম, ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সাকা, কাজিরবাগ ইউপি চেয়ারম্যান কাজী বুলবুল আহমেদ সোহাগ।
কালিদহ ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ডালিম, মোটবী ইউপি চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ, মাতুভূঞা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন, সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাদল।
পৌরসভার কাউন্সিলর জয়নাল আবদীন লিটন হাজারী, আশরাফুল আলম গিটার, লুৎফুর রহমান খোকন হাজারী, আমির হোসেন বাহার, কোহিনুর আলম রানা, গোলাম মেহেদী আলম চৌধুরী রুবেল, হারুন উর রশিদ মজুমদার, বাহার উদ্দিন বাহার, আবুল কালাম, সাহাব উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর মজিবুর রহমান ভূঞা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য আবদুল জলিল আদর।
জেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি জিয়াউল আলম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল বাহার ফয়সাল, সহসম্পাদক হুমায়ুন কবীর, সদর উপজেলা সভাপতি নুরুল আবছার আপন, পৌর যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু, রেজাউল করিম নাদিম, সহসম্পাদক আবুল কালাম সোহেল, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম মোহন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি জিয়াউদ্দিন বাবলু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু, সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ, যুগ্ম-সম্পাদক রাকিব অর্ণব, পৌরসভার সাবেক সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত রাজু, সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুস শুক্কুর মানিক, সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক আবদুল্লাহ আল ফিরোজ।
জেলা তাঁতী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক ওমর এলাহী সুমন, ধলিয়া ইউনিয়ণ যুবলীগের সহসভাপতি নুরুল আলম বাদশা, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ডালিম, স্থানীয় যুবলীগ নেতা সরোয়ার হোসেন রতন, হায়দার হোসেন পিংকু, শর্শদী ইউনিয়নের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সম্রাট, মহিপালের ছাত্রলীগ নেতা নাহিয়ান চৌধুরীর নাম রয়েছে।
এজাহরে ইউসুফ উল্লেখ করেন, গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচীতে তার ভাই সবুজ অংশ নেয়। ওইদিন দুপুর ২টার দিকে ট্রাংক রোড থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ শুরু করলে সবুজ সার্কিট হাউজ রোডের দিকে চলে যায়। সেখানে স্বপন মিয়াজী, জানে আলম, মাহবুবুল হক লিটন ও অর্নবের গুলিতে সবুজ লুটিয়ে পড়লে অপর আসামিরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে সবুজের মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে পুনরায় হামলার আশঙ্কায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ গ্রামের বাড়ি নিয়ে দাফন করা হয়।
ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রুহুল আমিন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গুলিতে অটোরিকশাচালক সবুজ নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ মামলায় জয়নাল হাজারির পিএস মানিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।