সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

লাকি ব্যাম্বুতে ভাগ্য ফেরা হাফিজের উৎপাদিত পণ্য যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে

লাকি ব্যাম্বু চাষে ভাগ্য বদলেছে গাইবান্ধার মো. হাফিজের। ছবি : কালবেলা
লাকি ব্যাম্বু চাষে ভাগ্য বদলেছে গাইবান্ধার মো. হাফিজের। ছবি : কালবেলা

লাকি ব্যাম্বু যার বাংলা হলো ভাগ্যবান বাঁশ। কোনো কোনো দেশে একে ফ্রেন্ডশিপ বাঁশ, কোঁকড়া বাঁশ, চায়নিজ ওয়াটার ব্যাম্বু বা দেবীর দয়ার গাছসহ বিভিন্ন নামেও ডাকা হয়। লাকি ব্যাম্বুকে চীনারা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য করে থাকেন। আর এই লাকি ব্যাম্বু চাষে লাক ফিরেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের পরান গ্রামের মো. হাফিজের।

মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করা সফল এই উদ্যোক্তার উৎপাদিত লাকি ব্যাম্বু দিয়ে তৈরি টবে রাখার মতো বিভিন্ন ডিজাইন যাচ্ছে এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা। মাত্র সাড়ে তিন বছরে ঘুচিয়েছেন তার বেকারত্ব।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, লাকি ব্যাম্বু উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং সবুজের দিকে তাকালে চোখের দৃষ্টিশক্তিও স্বাভাবিক থাকে। উদ্ভিদটিকে বাঁশ গাছ বলা হলেও, এই গাছ আসলে বাঁশ প্রজাতির নয়, এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলের লিলি প্রজাতির গাছ।

সরেজমিন দেখা গেছে, চার খণ্ডে বিভক্ত তিন বিঘা জমিতে ৩টি ভিন্ন রঙের ভাগ্যবান গাছ চাষ করেছেন মো. হাফিজ। কোনো অংশে চাষ করা হয়েছে সবুজ রঙের, কোনো অংশে আবার সবুজের মাঝে সাদা ডোরাকাটা, আবার কোনো অংশে লাগানো হয়েছে গাঢ় সবুজ রঙের এই বাঁশ। সূর্যের আলোতে উৎপাদন হয় না বলে আধো আলো ছায়া দেওয়ার জন্য পুরো জমির ওপর উঁচু করে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে সবুজ রঙের নেট জাতীয় কাপড়। খেতে ঢুকতেই চোখ যেন আটকে যায় সবুজে ভরা ভাগ্যবান এই উদ্ভিদের নজর কারা সৌন্দর্যে। টবে রাখার মতো উপযোগী সাজানো একেকটি ডিজাইনের দাম ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। কখনো বা তারও বেশি। সে হিসাবে প্রতিবার রপ্তানিতে হাফিজের আয় হয় ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা।

হাফিজ তার সৌভাগ্য বাঁশ থেকে উৎপাদিত গৃহসজ্জার এসব পণ্য রপ্তানি করে থাকেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান, কাতার, দুবাই ও সৌদি আরবে। প্রচুর অক্সিজেন পাওয়া যায় বলে মরুভূমির এসব দেশে তার পণ্যের কদর বেশি। মাত্র সাড়ে তিন বছরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠা তরুণ উদ্যোক্তা হাফিজ কালবেলাকে বলেন, গৃহসজ্জার জন্য তৈরি এসব পণ্য এ পর্যন্ত ওমানে পাঁচবার, কাতারে দুবার, দুবাইয়ে দুবার এবং সৌদি আরবে একবার পাঠিয়েছি। আয়ও হচ্ছে যথেষ্ট। আমার মতো যেন অন্যরাও উদ্যোক্তা হয়ে নিজে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারেন সেই আশাবাদও ব্যক্ত করেন তরুণ এই উদ্যোক্তা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাশিদুল কবির কালবেলাকে জানায়, লাকি ব্যাম্বু উদ্ভিদের রং গাঢ় সবুজ বলে তা বাড়ির অন্তঃপুরে রাখলে ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। হাফিজের মতো যেন অন্যান্য যুবকও উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেন, এমন প্রচেষ্টা নিয়ে কাজ করছি আমরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কেশবপুরে চার নারী পেলেন ‘অদম্য নারী পুরস্কার’

সিলেটে ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ ১৪ প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ টাকা জরিমানা

শরীয়তপুরে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে আটক ৬ জেলে, ১৩ মাস পর হস্তান্তর

হাটহাজারীতে খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় গণদোয়া

জনসভায় হামলা-ভাঙচুর গণতন্ত্রের ওপর গভীর হুমকি : জেএসডি

একাধিক চাকরি করলে শিক্ষকদের এমপিও বাতিল

সিলেটকে বাংলাদেশের ১ম দুর্নীতিমুক্ত জেলা ঘোষণার উদ্যোগ

সাবেক সেনা কর্মকর্তার কাছে তারেক রহমানের দুঃখ প্রকাশ

১০

বিএনপি তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ : টুকু

১১

ঢাকায় নেত্রকোনা মুক্ত দিবস উদযাপন

১২

এনসিপির প্রথম ধাপের মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা কাল

১৩

যুদ্ধবিমান ইউরোফাইটার টাইফুনের অনন্য যেসব শক্তিমত্তা

১৪

যাত্রীদের সুসংবাদ দিল মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ

১৫

ব্যাংক কর্মীদের উৎসাহ বোনাস নিয়ে নতুন নির্দেশনা

১৬

গুলিবিদ্ধ বিএনপি নেতার খোঁজ নিলেন জামায়াত নেতারা

১৭

শাটল ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু

১৮

চিকিৎসাধীন অবস্থায় চবি ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

১৯

‘বিএনপির নামে কেউ চাঁদাবাজি করলে টাকা ফেরত দিতেই হবে’

২০
X