পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৪৬ এএম
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০৭:০২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

চাকরির পাশাপাশি ইউটিউব দেখে সফল কৃষি উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর 

সফল কৃষি উদ্যোক্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম। ছবি : কালবেলা 
সফল কৃষি উদ্যোক্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম। ছবি : কালবেলা 

ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানির বিপণন বিভাগে চাকরি করেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই তার কৃষির প্রতি ছিল মারাত্মক ঝোঁক। স্বপ্ন দেখতেন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার।

সেই স্বপ্নপূরণে চাকরির পাশাপাশি ২০১৯ সালে অন্যের জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন লেবু ও মালটার চাষ। পরে সেখানে সাথি ফসল হিসেবে যুক্ত করেন পেঁপে। শুরুতে জাতের কারণে দুই বছর পেঁপেতে মুনাফা করতে না পারলেও হাল ছাড়েননি তিনি। ইউটিউব দেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ভালো জাতের চারা সংগ্রহ করে আবারও পেঁপে লাগিয়ে বর্তমানে তিনি একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা।

মালটাতে তার মুনাফা না এলেও লেবু, পেঁপে ও অন্যান্য ফসল মিলিয়ে এখন তিনি বছরে আয় করছেন প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত ৫ জনের।

জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে জাহাঙ্গীর আলমের রয়েছে স্ত্রী ও এক পুত্র সন্তান।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে জাহাঙ্গীর আলমের কৃষি খামার পীরগাছার সৈয়দপুরে গিয়ে দেখা যায়, ৩ একর ৩০ শতক আয়তনের সেই খামারে একাংশে লেবু, আরেক অংশে মালটা, পেঁপে ও অন্যান্য ফসল লাগানো হয়েছে। শ্রমিকরা লেবু ও পেঁপে আহরণ করছেন। একজন ব্যাপারী এসেছেন সেগুলো কিনতে। আবার কেউ এসেছেন তার প্রজেক্ট দেখতে।

এ সময় জাহাঙ্গীর আলম জানান, বর্তমানে তার কৃষি খামারে শাহী জাতের ৫০০ পেঁপে, ৩০০ মালটা ও ২৫০০ লেবু গাছ রয়েছে। এ ছাড়া ৩০ শতকের আরেকটি প্লটে তার আরও ৩০০ পেঁপের গাছ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি সাথি ফসল হিসেবে আদা, ওল এবং আখসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ করছেন। তার স্ত্রী ও একজন মামা সেগুলো দেখাশোনা করেন। ঢাকায় থাকলেও তিনি মোবাইলে সবসময় তার কৃষি খামার তদারকি করেন।

তিনি আরও জানান, মালটা চাষে সময় বেশি লাগে। সে তুলনায় বাজারে দাম কম হওয়ায় তিনি মালটায় মুনাফা করতে পারেননি। তাই এবার মালটা তুলে সেখানে পেঁপে লাগাবেন। কেননা পেঁপে অত্যন্ত লাভজনক।

তরুণ ও বেকারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পেঁপের প্রধান শত্রু পানি। যাদের উঁচু জমি আছে তাদের প্রথমে অল্প অল্প করে চাষ করে ধীরে ধীরে এগোতে হবে। শুধু কৃষি অফিসের ওপর ভরসা করে থাকলে হবে না। নিজেদের সজাগ থাকতে হবে।

স্থানীয় বিপ্লব বলেন, তিনি একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তিনিও ইউটিউব দেখে পেঁপে লাগিয়েছিলেন। কিন্তু ভালো ফলন পাননি। জাহাঙ্গীর আলমের নিকট তিনি এসেছেন পরামর্শ নিতে। যাতে তিনিও সফল হতে পারেন।

বাগানের শ্রমিক খোদেজা বেগম জানান, তিনি সেখানে নিয়মিত কাজ করেন। তাদের নিয়মিত মজুরি দেওয়া হয়। সেখানে কাজ করে তাদের সংসার ভালো চলছে। তিনি চান এলাকায় এরকম খামার যেন আরও বেশি হয়। তাহলে তাদের মতো মহিলাদের বেশি বেশি কর্মসংস্থান হবে।

খামারে পণ্য কিনতে আসা ব্যাপারী আব্দুল গফুর বলেন, তিনি নিয়মিত এই খামার থেকে পণ্য কেনেন। এখানে অনেক মহিলার কর্মসংস্থান হয়েছে। এলাকায় এরকম আরও খামার হলে অনেকের কর্মসংস্থান হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে উদ্যোক্তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করার জন্য ব্লক সুপারভাইজাররা রয়েছেন। তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকেন। আমার পরামর্শ উদ্যোক্তারা যেন কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হাতিয়ায় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেপ্তার

বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান মিন্টু চিরনিদ্রায় শায়িত

ঢাকা-১৩ আসনে ধানের শীষের সমর্থনে যুবদলের গণমিছিল

নতুন জোটের ঘোষণা দিল এনসিপি

কড়াইল বস্তিতে আগুন, তারেক রহমানের সমবেদনা

কড়াইল বস্তিতে আগুনের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার উদ্বেগ ও সমবেদনা 

গণভোট অধ্যাদেশ জারি করে গেজেট প্রকাশ

জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন মাসউদ

কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে

চীনা দূতাবাস কর্মকর্তার সঙ্গে চৌদ্দগ্রাম জামায়াত নেতাদের মতবিনিময়

১০

নুরুদ্দিন আহম্মেদ অপুর সঙ্গে সেলফি তুলতে মুখিয়ে যুবসমাজ

১১

অগ্রণী ব্যাংকের লকারে শেখ হাসিনার ৮৩২ ভরি স্বর্ণ

১২

শুভর বুকে ঐশী, প্রেম নাকি সিনেমার প্রচারণা?

১৩

৭০৮ সরকারি কলেজকে চার ক্যাটাগরিতে ভাগ

১৪

ইউএস বাংলার সাময়িকীর কনটেন্ট তৈরি করবে অ্যানেক্স কমিউনিকেশনস

১৫

সাদিয়া আয়মানের সমুদ্র বিলাশ

১৬

পৌরসভার পরিত্যক্ত ভবনে মিলল নারীর মরদেহ 

১৭

কড়াইলের আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণ জানাল ফায়ার সার্ভিস

১৮

প্রশাসনের ৭ কর্মকর্তার পদোন্নতি

১৯

যুক্তরাষ্ট্রে যোগাযোগ ও মিডিয়া কনফারেন্সে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আলোচনা

২০
X