সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার মো. রেজাউল করিম বলেছেন, জনতার পুলিশ হিসেবে কাজ করে যেতে চাই। আমরা দলীয় বা কোনো গোষ্ঠীর পুলিশ নই। জনগণের পুলিশ। আর দলদাস হতে চাই না। বিগত সময়ে কিছু পুলিশ সদস্যদের অপেশাদারত্বের কারণে আমরা আজ বিপর্যস্ত। অপরাধী যেই হোক বিচার হবে। অপরাধী পুলিশ সদস্যদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে সিলেটে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
রেজাউল করিম বলেন, আমি নিজে চাকরিজীবনে দীর্ঘদিন থেকে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছিলাম। ছাত্র-জনতার ত্যাগের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশে আজ পদোন্নতি পেয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। আমরা তাদের রক্তের কাছে ঋণী। সিলেট পবিত্র নগরী ও খুবই শান্তিপূর্ণ পূণ্যভূমি হিসেবে সারা দেশের মানুষের কাছে সুপরিচিত। ছাত্রজীবন থেকে সিলেটের সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক রয়েছে।
এসএমপি কমিশনার বলেন, আমরা মেট্রোপলিটন পুলিশ সিলেট সিটিকে শান্তির নগরী হিসেবে গড়তে চাই। বিগত দিনে পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তার বাড়াবাড়িতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তাহলে ভবিষ্যতে কেউ আর আইনের দায়িত্ব পালনের সময়ে অপরাধ করার সাহস করবে না।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, সাংবাদিক আবু তাহের মো. তুরাবের রুহের মাগফেরাত কামনা করি ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সাংবাদিক তুরাব হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে ও শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। বিগত দিনে যারা অবৈধ অস্ত্র নিয়ে রাজপথে প্রদর্শন করেছেন ও ব্যবহার করেছেন সেগুলো উদ্ধারে আপনাদের সহযোগিতা চাই।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আহত ও নিহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যদের মনে ভয়ভীতির সঞ্চার হয়েছে ও কাজ করার মনোবল কমেছে। এই সুযোগে পুলিশ সদস্যদের দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হয়েছিল। এই দুঃসময়ে আমরা পুলিশ সদস্যের বুঝিয়েছি ও এই অবস্থাও কাটিয়ে উঠেছি। আমাদেরকে শান্তি, শৃঙ্খলা ও দেশের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। আমরা জনতার মধ্যে জনতার পুলিশ হিসেবে থাকতে চাই। বিগত দিনে যারা অন্যায় কর্মকাণ্ড করেছেন, যারা দুর্বৃত্ত ও অপরাধী তাদের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিক তুরাব হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা, অবৈধ চিনি ব্যবসা, অস্ত্র, মাদক ও চোরাইপথে ভারতীয় পণ্য সিলেট নগরী হয়ে সারা দেশে যাচ্ছে। এই সব কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এগুলো অতীতে প্রশাসনের একশ্রেণির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হয়েছে। বিগত দিনে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের যে প্রদর্শন হয়েছে সেগুলো উদ্ধারেও দাবি জানাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ইকরামুল কবির, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী, সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম, ইমজার সভাপতি সজল ছত্রী, সাধারণ সম্পাদক শ্যামানন্দ দাশ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন