নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ পিএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ড্রেসিংয়ে গেলে বলতেন আন্দোলনে গেছিলা ক্যান’

নওগাঁয় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা। ছবি : কালবেলা
নওগাঁয় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা। ছবি : কালবেলা

‘গুলি খেয়ে আহত হয়েও হাসপাতালে আমি বলতে পারিনি আমার নাম নাহীদ হাসান। চিকিৎসা নিতে আমাকে দিতে হয়েছিল মিথ্যা পরিচয়। ড্রেসিংয়ের সময় প্রচণ্ড চিৎকার দিয়ে উঠতাম। কারণ চিকিৎসকরা কসাইয়ের মতো ড্রেসিং করত। ব্যথা পাচ্ছি বললে আমাকে বলতেন- আন্দোলনে গেছিলা ক্যান।’

নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে এক স্মরণসভায় আন্দোলনের অনুভূতি জানাতে গিয়ে এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলেন গুলিতে আহত শিক্ষার্থী নাহীদ হাসান।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন এ স্মরণসভার আয়োজন করে।

জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আয়োজিত স্মরণসভায় আলোচনা করেন পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. নজরুল ইসলাম ও নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন শীষসহ সব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা।

আরও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়ক রিয়াজুস সালেহীন ও ফজলে রাব্বি। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনে শহীদ মাহফুজ আলম শ্রাবনের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান এবং গুলিতে আহত মো. নাহিদ হাসান।

বক্তারা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে কেবল সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্য ছিল না, লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, ফ্যাসিবাদীমুক্ত একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলা। ভবিষ্যতে আর কখনো যাতে অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকার এ দেশে তাদের নৈরাজ্য কায়েম করতে না পারে।

তারা আরও বলেন, এই আন্দোলনে আহত ও যুদ্ধাহত পরিবারের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যে কোনো প্রয়োজনে আপনাদের পাশে থাকব। শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম, মুগ্ধসহ অনেকে শহীদ হয়েছেন। জুলাইয়ে এটা কোনো ব্যক্তির আন্দোলন ছিল না, প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের আন্দোলন ছিল। তাই বৈষম্যহীন একটি বাংলাদেশ গড়তে তাদের অবদান আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। এই শহীদদের আত্মত্যাগ সবার হৃদয়ে ধারণ করে বৈষম্যহীন একটি বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

যে ব্যক্তি আহত হয় তার কষ্ট হয়তো আমরা বুঝব না। আহত ব্যক্তির কষ্ট প্রতিটা মিনিট, প্রতিটা সেকেন্ড তার পরিবারকেও ভোগ করতে হচ্ছে। আমাদের এমন কিছু করে যাওয়া উচিত আন্দোলনে যারা আহত হয়েছে, ভবিষ্যতে তারা যেন পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে জীবন-যাপন করতে পারে।

তারা বলেন, আমরা জনতার পাশে ছিলাম, এখনো আছি এবং যারা আহত হয়েছেন অনেকের নাম সরকারের তালিকায় নেই। তাদের সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান করা হচ্ছে।

পরে জুলাই-আগস্টে অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে তাদের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, বহু হতাহত

বৃষ্টি আর কতদিন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

ইলিয়াস কাঞ্চনের মৃত্যুর গুজব, যা বললেন ছেলে জয়

শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়াকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

দলে দলে ঘরে ফিরছে হাজারো গাজাবাসী

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

রাজধানী থেকে বগুড়া শহর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার

হেফাজতে ইসলাম সবার জন্য পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছে :  এ্যানি

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ

১০

ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার উৎসর্গ করলেন মারিয়া

১১

দেশের ৪০ শতাংশ নারী থাইরয়েডে আক্রান্ত!

১২

‘এই পচা চালের ভাত কীভাবে খাব’

১৩

‘পুলিশ এখন বানরের মতো’ বললেন ওসি হাবিবুল্লাহ

১৪

ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে নামতে পারে আর্জেন্টিনা

১৫

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে একমাত্র পথ সুষ্ঠু নির্বাচন : নীরব

১৬

যশোরের ৪ মহাসড়কে মহাদুর্ভোগ

১৭

সুদের টাকা না পেয়ে ঘরের টিন কাঠ খুঁটি খুলে নিলেন ইমাম

১৮

সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামের মৃত্যুতে ঢাবি সাদা দলের শোক

১৯

কিউইদের কাছে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শোচনীয় পরাজয়

২০
X