বই হোক প্রকৃত বন্ধু। বইয়ের সঙ্গে পাঠকের আত্মিক সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক তৈরি করতে সুনিবিড় পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে বান্দরবান সরকারি গণগ্রন্থাগার।
শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিনই গ্রন্থাগারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সমাবেশ ঘটে। তাকে তাকে সাজিয়ে থাকে শত শত লেখকের বই ও ম্যাগাজিন।
পাঠক তার প্রিয় লেখক কিংবা ম্যাগাজিন পেলেই বইয়ের তাক থেকে নামিয়ে বইটি পড়েন, সমৃদ্ধ করেন তার জ্ঞানের রাজ্যকে। কিন্তু সেই জ্ঞানের রাজ্যে হানা দিয়েছে বন্যা। তছনছ হয়ে গেছে বইয়ের সাম্রাজ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাদামাটি আর ভিজে একাকার বইগুলো। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বইয়ের তাক থেকে একে একে বই ফেলছেন বারান্দায়। বড় একটি স্তূপ তৈরি হয়েছে বারান্দায়। পচা গন্ধ ছড়াচ্ছে চারপাশে। বই পড়ার পাঠ কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, পুরো ফ্লোরের চারপাশে জমে আছে ময়লাযুক্ত বন্যার পানি।
সব দেয়ালে লেগে আছে কাদা, এখনো শুকোয়নি। চেয়ার-টেবিলগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে আছে মেঝেতে। আর কোনো কোনো আলমারি একেবারে উল্টে গেছে। শত শত বই মেঝের চারপাশে। পচে গন্ধ ছড়াচ্ছে।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, বান্দরবান সরকারি গণগ্রন্থাগাারের ইনচার্জ মা শৈ সিং গ্রন্থাগারের এক পাশে বসে আছেন। সবাইকে প্রযোজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন। আর পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বইগুলো একে একে নিয়ে বারান্দায় ফেলছেন। আবার কেউ কেউ ব্লিচিং পাউডার দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করছেন। আবার কেউ তৈজসপত্র পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বান্দরবান সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত বড়ুয়া জানান, কলেজে যাওয়ার সময় প্রতিদিনই লাইব্রেরিতে ঢুকতাম। পত্রিকা আর পছন্দের বই পড়তাম। এবারের বন্যায় সব বই নষ্ট হয়ে গেছে। আমার জীবনে এ রকম বন্যা আর দেখিনি। বান্দরবানের বড় সড়কগুলো এবারের পানিতে ডুবে গেছে।
বান্দরবান সরকারি কলেজের মাস্টার্সপড়ুয়া আরেক শিক্ষার্থী অর্ক বিশ্বাস জানান, বই প্রকৃত বন্ধু। বই পড়তে ভালো লাগে। সময় পেলেই লাইব্রেরিতে আসতাম। তবে এবার বন্যার পানিতে সব বই নষ্ট হয়ে গেছে। পচে গন্ধ বের হচ্ছে।
বান্দরবান সরকারি গণগ্রন্থাগারের ইনচার্জ মা শৈ সিং বলেন, ২০১৯ সালে লাইব্রেরিতে পানি উঠেছিল। তবে সেবার প্রায় সাড়ে ৩ হাজারের মতো বই নষ্ট হয়েছিল। এবারের বন্যার পানি বেশি ক্ষতি করেছে। প্রায় ২৮ হাজারের মতো বই ডুবে গেছে। জীবনে কখনো এমন বন্যা দেখিনি।
মন্তব্য করুন