রোজপুরের মঠবাড়িয়া শহরের ঝুঁকিপূর্ণ তিনটি বেইলি ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিনই পারাপার হচ্ছে ভারী যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ। শহরের প্রাণকেন্দ্রে ব্রিজ তিনটি অবস্থিত হওয়ায় একদিকে যেমন যানজট ও অপরদিকে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে শহরের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে প্রায়ই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
শহরের দুই প্রান্তের প্রবেশদ্বারে দুটি এবং মধ্যখানে অবস্থিত একটি বেইলি ব্রিজ এখন পথচারীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে থানাপাড়া এলাকার কলবাড়ি খালের ওপর গার্ডার ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হলেও অন্য দুটি ব্রিজ নির্মাণে কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। অথচ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বহেরাতলা জামে মসজিদসংলগ্ন খাল ও মাছ বাজারসংলগ্ন খালের অকেজো বেইলি ব্রিজের স্থানে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর কাজের উদ্বোধন করেন। ভিত্তিপ্রস্তর কাজের উদ্বোধনের এক বছরের অধিক সময় পার হয়ে গেলেও বহেরাতলা ও মাছ বাজারসংলগ্ন খালের ওপর ব্রিজের কাজ শুরু না হওয়ায় জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, মঠবাড়িয়া শহরের প্রধান প্রবেশদ্বার বহেলাতলা ব্রিজ। ব্রিজটির স্টিলের পাতগুলো জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়া প্রায়ই অটো, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাকা ব্রিজের ভাঙা স্টিলের পাতের ভিতর ঢুকে ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ছাড়া মাছবাজার সংলগ্ন খালের বেইলি ব্রিজটিরও স্টিলের পাটাতন (স্ল্যাব) ভেঙে করুণ দশা। ব্রিজের ভাঙা পাতে প্রায়ই অনেক শিক্ষার্থীর পা ঢুকে দুর্ঘটনা ঘটে। ব্রিজের স্টিলের পাতগুলো ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বেইলি ব্রিজ দিয়ে ঐতিহ্যবাহী কে এম লতিফ ইনস্টিটিউশন, সরকারি হাতেম আলী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫৬নং মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মঠবাড়িয়া সরকারি কলেজ, মহিউদ্দিন আহমেদ মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ১৫ থেকে ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ব্রিজের স্লাবগুলো নড়বড়ে হওয়ায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
শহরের ভাই ভাই ফার্নিচারের স্বত্বাধিকারী শাহ আলম মীর জানান, সম্প্রতি তার দোকান থেকে একজন ক্রেতা খাট ও আলমিরা ক্রয় শেষে বাড়ি ফেরার পথে বহেরাতলা ব্রিজের স্টিলের স্লাবগুলো জরাজীর্ণ হওয়ায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এতে ওই ক্রেতার ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়।
এ ব্যাপারে পিরোজপুর সড়ক ও জনপদের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাজিমুল আলিম রাজু জানান, জমি অধিগ্রহণ করতে না পারায় মঠবাড়িয়ার বহেরাতলা ও মাছবাজারসংলগ্ন স্টিল ব্রিজের কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষে ব্রিজ দুটির নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন