নওগাঁর মান্দায় নিখোঁজের চারদিন পর অটোরিকশার চালক গোলাম রাব্বানীর ভাঁসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার ( ১৮ আগষ্ট) বিকেলে জেলার মহাদেবপুর উপজেলার সাগরইল বাজার সংলগ্ন গুনদইল খাড়ির ব্রিজ এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত হওয়া নাহিদ হোসেন ও তুহিন ইসলামকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। নিহত গোলাম রাব্বানী মান্দা উপজেলার গশেনপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীরামপুর (বিলবাড়িয়া) গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে।
গত ১৪ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পর থেকে তার ব্যবহৃত ফোনও বন্ধ। অটোরিকশারও খোঁজ পাননি পরিবারের লোকজন।
গোলাম রাব্বানী নিখোঁজের ঘটনায় গত মঙ্গলবার থানায় সাধারণ ডায়রি দায়ের করা হয়। রাব্বানীর খোঁজ না মেলায় বাবা আক্কাস আলী সরকার বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে মান্দা থানায় মামলা করেন। মামলায় উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা নাহিদ হোসেন ও তুহিন ইসলামের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মান্দা থানার ওসি মোজাম্মেল হক কাজী জানান, মহাদেবপুর থানা পুলিশের সহায়তায় গুনদইল খাড়ি থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহতের স্বজনেরা মরদেহটি গোলাম রাব্বানীর বলে শনাক্ত করেন। সুরুতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রাব্বানীর অটোরিকশা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ওসি আরও বলেন, রাব্বানী নিখোঁজ হওয়ার পর রাব্বানী সম্পর্কে নাহিদ ও তুহিন তাদের পরিবার ও প্রতিবেশীদের কাছে বিভিন্ন কথাবার্তা ও বিপদের কথা বলেছেন।
বিষয়টি জানতে পেরে রাব্বানীর পরিবারের অভিযোগে ও এলাকাবাসী সন্দেহভাজন হিসেবে নাহিদ ও তুহিনের আত্মীয়স্বজন, মা-খালাসহ তিনজনকে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করা হয়। ওই দিন রাতে থানায় মামলা দায়ের করা হলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে ঘটনার মূল হোতা নাহিদ হোসেন ও তুহিন ইসলাম আত্নগোপনে থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার মিস্ত্রি (৫৫), উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের নার্গিস বেগম (৬০) ও নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার শিকারপুর গ্রামের আংগুর বেগমকে (৫৫)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জিগাতলা বাজারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় নিখোঁজের দিন গত সোমবার সকাল ১০টা ২ মিনিটে রাব্বানী তার অটোরিকশায় নাহিদ ও তুহিনকে নিয়ে মহাদেবপুর উপজেলার দিকে যাচ্ছিলেন।
এরপর রাব্বানীর নিখোঁজ হওয়া সংবাদ ছড়িয়ে পরলে গত বুধবার বিকেলে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজটি সংগ্রহের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর নাহিদ ও তুহিন এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন