দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৫, ১১:১৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

পঞ্চগড়ে বিপন্ন লক্ষ্মীপেঁচা উদ্ধার

দেবীগঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে লক্ষ্মীপেঁচাটিকে হস্তান্তর করা হয়। ছবি : কালবেলা
দেবীগঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে লক্ষ্মীপেঁচাটিকে হস্তান্তর করা হয়। ছবি : কালবেলা

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে আহত অবস্থায় বিপন্ন প্রজাতির একটি লক্ষ্মীপেঁচা উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২ মার্চ) দুপুরে দেবীগঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে লক্ষ্মীপেঁচাটিকে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে সকালে উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের মহলদার পাড়া এলাকা থেকে পাখিটিকে উদ্ধার করেন স্থানীয় ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার শরিফ আহমেদ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে দেবীডুবা ইউনিয়নের মহলদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা আক্তারুল ইসলাম কালীগঞ্জ বাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে ধান ক্ষেতের পাশে লক্ষ্মীপেঁচা বসে থাকতে দেখেন। পাখিটিকে আহত দেখে তিনি সেটি নিয়ে বাসায় ফেরেন। পরে তিনি স্থানীয় ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার শরিফ আহমেদকে খবর দেন। শরিফ আহমেদ রোববার সকালে পাখিটি উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। এরপর পাখিটিকে বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার শরিফ আহমেদ বলেন, লক্ষ্মীপেঁচাটি আহত অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা শেষে পাখিটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কৃষকের পরম বন্ধু লক্ষ্মীপেঁচার প্রধান খাদ্য ইঁদুর। ধানের গোলার আশপাশে বাসা বাঁধার কারণে ইংরেজিতে একে 'Barn Owl' বলা হয়।

তিনি বলেন, একসময় সারা দেশে এদের অবাধ বিচরণ থাকলেও বর্তমানে আবাসস্থল ধ্বংস, খাবারের সংকট ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে এদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে। নিশাচর হওয়ায় দিনের বেলায় কম দেখা যায়, ফলে অনেকেই ভুল করে একে বিরল প্রজাতি মনে করেন। প্রকৃতিতে লক্ষ্মীপেঁচা টিকিয়ে রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

বন বিভাগের দেবীগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে লক্ষ্মীপেঁচাটির ডানার হাড় ভেঙে গেছে। এখানে চিকিৎসা করানো সম্ভব না। এ ছাড়া আমাদের এখানে পাখি রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই লক্ষ্মীপেঁচাটিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করার কিছুক্ষণ পরেই পাখিটিকে দিনাজপুরের সিংড়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

লক্ষ্মীপেঁচা সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, ‘লক্ষ্মীপেঁচা (Barn owl) সারাদেশেই কমবেশি দেখা যায়। গাছের উঁচু ডাল, পরিত্যক্ত বাড়ি, গাছের কোটর ইত্যাদি অন্ধকারাচ্ছন্ন নির্জন পরিবেশে থাকতেই এরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। প্রাণীটি ইঁদুরসহ ফসলের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে কৃষকের উপকার করে। কিন্তু কুসংস্কার, বৈরী পরিবেশ, খাদ্যের অভাব, আবাসস্থল ধ্বংস হওয়া ছাড়াও লক্ষ্মীপেঁচার প্রতি কাকসহ কয়েকটি পাখির শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব এবং আক্রমণ ইত্যাদি কারণে এটি আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও আগামী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবীর স্বার্থে এই পাখিটি রক্ষার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন এই বন কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিয়ে করতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন এনামুল

শেখ ফয়েজ গ্রেপ্তার

দিনভর উত্তাল চট্টগ্রাম

যুবককে কুপিয়ে হত্যা

বিয়েতে মাইক বাজানোর শাস্তি বেত্রাঘাত!

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কড়াইল বস্তিবাসীর পাশে যুবদল নেতা

বড়পুকুরিয়ায় কয়লা স্তূপে ধস

চবিতে ভুয়া শিক্ষার্থী আটক

ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের নতুন সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন

জনগণের ভোটের আঘাতে সব ষড়যন্ত্র ধসে পড়বে : গয়েশ্বর

১০

স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নির্ভরতায় সশস্ত্র বাহিনী

১১

সিরামিক এক্সপো ২০২৫ প্রারম্ভে - ডিবিএল সিরামিকস সৌজন্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ

১২

জেলে বসেই অনার্সে ফার্স্ট, ১২ বছর পর মাস্টার্সেও প্রথম স্থান—কে এই শিবির নেতা?

১৩

ভাতিজার লাথিতে প্রাণ গেল চাচার

১৪

বহিষ্কৃত ৭৪ নেতাকে ‍নিয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত

১৫

কর্মবিরতির ঘোষণা শিক্ষকদের / প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা ঘিরে অনিশ্চয়তা

১৬

মা ও দুই শিশুর মরদেহ পৃথক স্থানে দাফন, মামলা হয়নি এখনো

১৭

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ধানের শীষের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে : সেলিমা রহমান

১৮

বিশ্বকাপ ড্র ফরম্যাটে বড় পরিবর্তন আনল ফিফা

১৯

গোলাম রাব্বানীর ছাত্রত্ব ও এক পদ বাতিল করল ঢাবি

২০
X