ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

অস্তিত্ব সংকটে ফুলবাড়ীর বাঁশ-বেতশিল্প

নারী-পুরুষের নিপুণ হাতে তৈরি করা হয় বাঁশ-বেতের দ্রব্যাদি। ছবি : কালবেলা
নারী-পুরুষের নিপুণ হাতে তৈরি করা হয় বাঁশ-বেতের দ্রব্যাদি। ছবি : কালবেলা

অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে একসময়ের সম্ভাবনাময় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর বাঁশ-বেতশিল্প। প্লাস্টিক পণ্যের অবাধ ব্যবহারসহ বিগত দুই বছরের করোনা মহামারির প্রভাবে এ শিল্পের বিলুপ্তি কর্মকাণ্ড আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।

৮০ থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত বাঁশ-বেতের দ্রব্যাদি তৈরি নিয়ে নারী ও পুরুষের কোলাহলে মুখর থাকত ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর পুরাতন বন্দর (বুড়াবন্দর) গ্রাম। এ গ্রামের বাঁশের তৈরি শিখাই, ফলদানি, বাস্কেট, বক্স, বিউটি বক্স, কসমেটিক্স বক্স, টি ট্রে, বিয়ের ডালা, লাইট সেট, মাথার ক্লিপ, কলমদানিসহ চোখ ধাঁধাঁনো নানান জিনিসপত্র তৈরি এবং বিভিন্ন দেশের রপ্তানি হতো এখান থেকে। নির্দিষ্ট আকার আকৃতির এসব পণ্য পুরো ফুলবাড়ীতেই তৈরি হতো।

এ সময় এখানকার নারী ও পুরুষের নিপুণ হাতের তৈরি বাঁশের পণ্য বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) মাধ্যমে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইতালি, জার্মানি, হল্যান্ডসহ বিভিন্ন উন্নতশীল দেশে রপ্তানি করা হতো। এ কারণে ফলে দেশি-বিদেশি ক্রেতা, রপ্তানিকারক, বায়ার, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের পদচারণায় মুখরিত থাকত গ্রাম। বর্তমানে শুধু বৈশাখী মেলাকেন্দ্রিক হওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প। বাপ-দাদার এই পেশা হারিয়ে যেতে বসলেও শত কষ্টের মধ্যেও এ পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন ৩ পরিবার।

১৯৮২ সালে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) কর্তৃক ‘শ্রেষ্ঠ কারুশিল্পী সনদ’ অর্জনকারী উপজেলার দক্ষিণ বাসুদেবপুর পুরাতন বন্দর (বুড়াবন্দর) গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন সামন্ত বলেন, বৈদেশিক বাজার হারিয়ে এ গ্রামের কয়েকজন ঢাকার বৈশাখী মেলার উদ্দেশ্যে সারা বছর ধরে পণ্য তৈরি করতেন। করোনার প্রভাবে কয়েক বছর থেকে তেমন মেলা না হওয়ায় সেই কাজও হারিয়ে ফেলেছেন। তবে ১৯৯০ সালের পর সরকারি বা বেসরকারিভাবে কেউই এই শিল্পকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। বর্তমানে মাত্র দু-তিনটি পরিবার এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ব্যাংক থেকে এ শিল্পের নামে কোনো বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন শিল্পীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই পেশায় টিকতে না পেরে একই এলাকার মরহুম ফারায়েজ মাওলানার ছেলে মানিক মিয়া, লালু সামন্তের ছেলে তপন সামন্ত, মরহুম আজগর আলীর ছেলে সারওয়ার হোসেন সবুজ, কালিদাস, দিলীপ সামন্ত, গৌড়াঙ্গ সামন্ত, কমল সামন্তসহ অন্তত দুই শতাধিক নারী-পুরুষ পেশা বদলেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ১৯৮০’র দশকে হ্যান্ডি ক্রাফটের (হস্তজাত শিল্প) ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এখন সেটি নেই। স্বল্প সুদের ঋণ ক্ষেত্রেও এ শিল্পের শিল্পীরা সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জবির ছাত্রী হল ও শহীদ সাজিদ ভবনের নামফলক স্থাপন

বাতিল হতে পারে আর্জেন্টিনার ভারত সফর!

সারাক্ষণ ফোন চার্জে রেখে ভুল করছেন না তো?

গাজাবাসীর সহায়তা মাস্তুল ফাউন্ডেশনকে ৫ লাখ টাকা অনুদান দিল পুনাক

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বিজিবি সদস্যের পা বিচ্ছিন্ন

শিশুর সুরক্ষায় জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচিতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন

ব্যাংকিং টিপস / নিরাপদ থাকতে হালনাগাদ রাখুন তথ্য

প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছে জাগপা

চাকসু নির্বাচনে দ্রোহ পর্ষদ প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা

ঢাবি তরুণ কলাম লেখক ফোরামের নেতৃত্বে আশিক-রাফি

১০

গাজা শহরকে নতুন করে নির্মাণ করতে কতদিন সময় লাগবে?

১১

ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৫৩

১২

চবির ভর্তি পরীক্ষা ২ জানুয়ারি

১৩

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ২ নেতা গ্রেপ্তার

১৪

নতুন বউ নিয়ে ঘরে প্রবেশের পরই ডাকাতের হানা, স্বর্ণালংকার লুট

১৫

৩ দাবিতে কাল থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি

১৬

ইব্রাহিমোভিচকে ছাড়িয়ে এমএলএসে মেসির নতুন ইতিহাস

১৭

মৎস্য কর্মকর্তাকে হত্যাচেষ্টা, ২৭ জেলে আটক

১৮

ফেসবুকে নতুন চমক, আসছে ইনস্টাগ্রামের মতো ফিচার

১৯

তারা দুনিয়াকে জানতে দিতে চায় না যে বিচার স্বচ্ছ হচ্ছে : চিফ প্রসিকিউটর

২০
X