চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিনিয়োগকারীদের থেকে কৌশলে দুবাইভিত্তিক এমএলএম কোম্পানি মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ (এমটিএফই) অনলাইন অ্যাপের মাধ্যমে কয়েকশ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র।
বিনিয়োগকারীরা দ্রুত সময়ে বিশাল লাভের প্রলোভনে এখানে বিনিয়োগ করেছিলেন। এখন বিনিয়োগ খুইয়ে লজ্জায় মুখ খুলছেন না। এমটিএফই অ্যাপে বিনিয়োগ সংযুক্ত করতে যারা অফিস খুলে বসেছিল তারা গা ঢাকা দিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এমটিএফই বাংলাদেশের কার্যক্রমের বড় হোতা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় তরিকুল ইসলাম ও তার প্রধান সহযোগী চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা কদমতলী গ্রামের নুরুন্নবী ওরফে পলাশ। তারা দুজনেই এক সময়ে ডেসটিনি নামের এমএলএম কোম্পানিতে যুক্ত ছিলেন। তারা নেটওয়ার্ক তৈরি করে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের বিভিন্নভাবে প্রতারণা করতেন। এবার এমটিএফই অ্যাপের মাধ্যমে হয়েছেন হঠাৎ করে কোটিপতি। একটি কোম্পানির অ্যাপ বন্ধ হলে আরেকটি নিয়ে শুরু করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমটিএফই’র এক বিনিয়োগকারী বলেন, সাত লাখ টাকা বিনিয়োগ ছিল তার। হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় অ্যাপটি। আমার মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জের অনেকেই বিনিয়োগ খুইয়েছেন। মামুন নামে এক বিনিয়োগকারী বলেন, ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন ধার-দেনা করে। বিনিয়োগ খুইয়ে এখন ঋণের বোঝা চেপেছে মাথায়। আহম্মেদ আবু আমিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে অ্যাপটি বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এর আগেই ডলার উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। আমার মতো অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন বলে জেনেছি।
তিনি আরও বলেন, এই অ্যাপে যুক্ত করিয়ে দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করাতে পারা ব্যক্তিকে বলা হয় সিইও। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ রকম প্রায় ১০ জন সিইও আছেন বলে জেনেছি। তাদের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে অফিস খুলে কার্যক্রম পরিচালনা করতেন জমশেদ আলী ও সাদিকুল ইসলাম ওরফে বাবু নামের দুই ব্যক্তি। সাদিকুল ইসলামের অফিস ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের উপররাজারামপুর মোড়ে। ঘটনার পর অফিস থেকে সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেছেন। এক সময় জমশেদ আলী ডেসটিনির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। এই অ্যাপের সঙ্গে জড়িতরা বেশিরভাগই ডেসটিনির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমটিএফই অ্যাপ উধাওয়ের পরপরই মাস্টারমাইন্ড নুরুন্নবী আরেক নতুন অ্যাপ জিটিসি-এক্স নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। এমনকি গত ১৭-১৯ আগস্ট জিটিসি-এক্স’র বাংলাদেশ টিমের কয়েকজনের ট্যুর হয়েছে কক্সবাজারে।
মন্তব্য করুন