নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর পানি বেড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানীর ছাতুনামা কেল্লাপাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫০টি পরিবার কষ্টে রয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাওয়ার রাস্তায় কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও তার চেয়ে বেশি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রবেশের প্রধান ফটক অংশে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রবেশের গলিতেও পানি প্রায় হাঁটু সমান।
৪৯ নম্বর ঘরের মালিক জয়গুন বলেন, ‘খুব বন্যা হইলে আঙ্গর সমস্যা হয়। এটা তো সমাধান করা লাগব। বন্যায় আমার ঘরের পূর্ব পাশের মাটি ভাইঙ্গা গেছে। চেয়ারম্যান, মেম্বার কয়েকদিন আগে আইছিল, তারা দেইখা গেছে। কিন্তু কামের কাম তো কিছুই হয় না। সবাই দেইখা যায় কামের কাম কিছুই হয় না।’
৬ নম্বর ঘরের বাসিন্দা বাহার আলী বলেন, ‘বারান্দা পর্যন্ত পানি ওঠে। পাশের যে স্কুল ঘর আছে ওইখানেও পানি। সবাইকে বলি কিন্তু কোনো কাজ হয় না। শরমে আর কাউকে বলি না।’
৫ নম্বর ঘরের বাসিন্দা ফুলোরা বেগম বলেন, ‘পানি যখন উঠে তখন খাটের ওপরে উঠি। একটা খাট কিনছি, ওই খাটে লুকি থাকি। বন্যা আইলে খাওয়া-দাওয়ার কথা বাদ দেই। আর একটা সিমেন্টের চুলা আছে সেইটা খাটের ওপরে তুলি রান্না করি। এই বারসহ চারবার বান (বন্যা) আইলো। কিন্তু চেয়ারম্যান তো একটা বারও আইলো না, বানো (বাঁধা) দিলে না।’
৪৮ নম্বর ঘরের বাসিন্দা মশিয়ার রহমান বলেন, ‘বর্তমানে তো নদীর পানি কিবলে বাড়ছে রাতে পানি হাঁটুর ওপরে উঠবে। শুধু উঠানে নয়, বারান্দা ও রুমেও পানি ওঠে। একদিন তো রাত ৩টায় ঘুম থেকে উঠে দেখি জুতা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। রুমে পানি উঠেছিল বিছানা থেকেই পা ধুয়েছিলাম। সরকারের লোকজন যখন বাড়ি তৈরি করেছে, তখন আরেকটু উঁচু করলে পানি উঠত না। আর কয়েকটা বাড়ি ফাঁটল ধরেছে। অলিয়ার রহমান নামের একজন এসে কয়দিন পরপর এসে ঠিক করে দিয়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এদিকে সিমেন্টের চুলা বেশি। রান্না-বান্না বিছানায় উঠে করি। খাওয়া-দাওয়া বিছানায় করি। সবাই আসে আর দেখে, কেউ কাজ করে না।’
এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউপির চেয়ারম্যান একরামুল হকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা ধরেননি।
ডিমলা উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মেজবাউর রহমান বলেন, ‘গত বন্যায় রাস্তাটি (আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাওয়ার রাস্তা) ভেঙে গেছে। কাবিখা প্রকল্পে রাস্তাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি তো এখানে নতুন এসেছি। আপনি যেখানকার কথা বলেছেন ওই স্থান মার্ক করতে পারছি না। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
মন্তব্য করুন