বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে বিনাভোটে ক্ষমতায় বসেছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে রেখেছে। বর্তমানে এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের দাবি উপেক্ষা করে বিদেশি প্রভুদের কাছে ধরনা দিয়ে আবারও অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার পাঁয়তারা করছে উল্লেখ করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, দেশের মানুষ তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে ঘরে ফিরবে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) অবৈধ, লুটেরা, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তিকরণ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নতুন ইসি গঠন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একদফা দাবিতে কালো পতাকা মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। দেশবাসী জেগে উঠছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে ইনশাআল্লাহ। নিপীড়ন করে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না। গণতন্ত্র আন্দোলনের বিজয় সুনিশ্চিত। সরকার যদি মনে করে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের কায়দায় দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করবে, তাহলে ভুল করবে। দেশের মানুষ আর কোনো প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নেবে না। আওয়ামী লীগের নেতারা এখন আবোলতাবোল বকছেন। এখন তাদের বিদায়ের পালা। বিএনপির সাথে দেশের জনগণ রাস্তায় নেমেছে, আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য। দেশের মালিকানা জনগণের, বিএনপির আন্দোলন এখন দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। চলমান আন্দোলনের কাফেলায় অংশ নিয়েছে কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা। সরকার ভোটের জন্য জনগণের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করছে না। জনগণের ভোটের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে অথচ কাজে বাকশাল কায়েম করছে।
ডা. জাহিদ দেশের মানুষকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আর যেন কেউ ভোটাধিকার কেড়ে নিতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। আন্দোলনের জয় সুনিশ্চিত- খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন, তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন, দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে তারপর নির্বাচন হবে। একদফা আন্দোলন মানেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে পরিবর্তন আনা। কিন্তু সরকার কিছুতেই এ জনদাবি মানতে চাইবে না। কারণ, তারা জনবিচ্ছিন্ন। অবৈধ সরকারকে এখন দেশ-বিদেশের সবাই ধিক্কার জানাচ্ছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, হত্যা ও দমন-পীড়নে বিএনপিকে দমানো যাবে না। এত নিপীড়ন, এত গুম-খুনের পরও বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। বিএনপি সেই ফিনিক্স পাখির মতো ধ্বংসাবশেষ থেকে জেগে উঠছে। এটাই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসক গোষ্ঠীর সবচেয়ে ভয়ের কারণ।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ সাবিরুল হক সাবু, কাজী আলাউদ্দিন প্রমুখ।
বিকেল ৩টার পর থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ড, থানা ও উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের খণ্ড খণ্ড মিছিল কালো পতাকাসহকারে নগরীর কে.ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ চলাকালে নেতাকর্মীদের মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজপথ। নগরীর কে.ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে কালো পতাকা মিছিলটি শুরু হয়ে স্যার ইকবাল রোড, লোয়ার যশোর রোডসহ কয়েকটি রোড প্রদক্ষিণ করে পাওয়ার হাউস মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন