সাতক্ষীরা জেলা যুবদলের সর্বশেষ কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও পৌর কাউন্সিলর আইনুল ইসলাম নান্টা। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৪৪টি মামলা ৯ বারে প্রায় দেড় বছর কারাভোগ করেছেন। এতে তিনি ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এত মামলার হামলার পরও তিনি দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের রেখেছেন উজ্জীবিত।
বর্তমানে আইনুল ইসলাম নান্টা সাতক্ষীরা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট সিভি জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, আইনুল ইসলাম নান্টা ১৯৯১ সালের ছাত্রদলের রাজনীতি দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আসেন। দায়িত্ব পালন করেছেন সাতক্ষীরা পৌর ছাত্রদলের ৩নং ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক, পৌর ছাত্রদলের সদস্য, জেলা যুবদলের যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক, পৌর যুবদলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক, পরবর্তী জেলা যুবদলের কমিটিতে পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) সাতক্ষীরা জেলা শাখার প্রথম সাধারণ সম্পাদকের। পরবর্তীতে ২০১৩ সাতক্ষীরা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এরপর ২৪ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে ২৪ এর ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি জেলা যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক পালন করেন। সেখান থেকে জেলা যুবদলের কমিটি না থাকলেও তিনি দলের সব কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পালন করে আসছে। এ ছাড়া তিনি স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের সময়ে একাধিকবার সাতক্ষীরা পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং প্যানেল মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আইনুল ইসলাম নান্টা বলেন, আমার এই দীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে বিগত (১/১১) ওয়ান ইলেভেন এবং ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনার নির্যাতনে ৪৪টি মিথ্যা মামলা ও ৯ বার কারাভোগ করেছি। বিভিন্ন সময়ে সর্বসাকল্যে প্রায় দেড় বছরের বেশি কারাভোগ করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পেটুয়া বাহিনী কর্তৃক আমার পরিবারের উপর কয়েকবার হামলা হয় এবং আমার বৃদ্ধ বাবাকে মারধর করে কলার বন (পাঁজরের হাড়) ভেঙে দেয়। এ ছাড়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসী পুলিশ আমার ৬ বছরের শিশু বাচ্চার বুকে শটগান ধরে আমার পরিবারের ওপর বহুবার অমানুষিক অত্যাচার করে। তারপরেও দলের প্রতি সাবেক সফল ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাস নিয়েই এই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ তারিকুল হাসান বলেন, যুবদল নেতা আইনুল ইসলাম নান্টা দলের দুঃসময়ে কখনই পিছু না হটে কর্মসূচি সফল করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, প্রকাশ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার সময়ে নেতৃত্বের অগ্রভাগে থেকেছেন। দলের কঠিন দুঃসময়ে আইনুল ইসলাম নান্টার নেতৃত্ব, ত্যাগ, হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার পাশাপাশি মানবিক কর্মসূচিগুলো দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে হয়েছে।
জেলা ও উপজেলা যুবদলের একাধিক নেতাকর্মী জানান, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে সাতক্ষীরায় দলের হাল ধরার কেউ ছিল না। তখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল ভাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু ভাইয়ের ভার্চুয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলা রাজপথ প্রকম্পিত করে আইনুল ইসলাম নান্টা। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের নির্দেশনায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সক্রিয় অংশগ্রহণ ও আন্দোলন সফল করার ভূমিকা রাখেন তিনি।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবার পর সাতক্ষীরা জেলা শহরের হিন্দু সম্প্রাদায়ের মধ্যে খানিকটা অস্থিরতা সৃস্টি হলে যুবদল নেতা ও পৌর কাউন্সিলর হিসেবে আইনুল ইসলাম নান্টা তাৎক্ষণিক ছুটে যান সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে। তিনি প্রতিটি মন্দির রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করেন।
প্রসঙ্গত, বিগত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলা যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। সেখান থেকেই অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ে সাতক্ষীরা জেলা যুবদল। সম্প্রতি গত ১৫ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলা যুবদলের নতুন কমিটির জন্য সিভি জমা দেওয়ান নির্দেশ দিয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক প্রার্থী হিসেবে সিভি জমা দিয়েছেন ৪৪ মামলা ও বহু নির্যাতনের শিকার যুবদল নেতা আইনুল ইসলাম নান্টা।
মন্তব্য করুন