দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় ইলিশ আহরণে নামছেন ভোলার জেলেরা। নৌকা ও জাল মেরামত করে এখন নদীতে নামার প্রহর গুনছেন তারা। দীর্ঘ কর্মহীন সময় শেষে জেলেপাড়ায় বইছে আনন্দ-উৎসবের আমেজ।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ভোলার ইলিশা নদী থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারসহ মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার মোট ১৯০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর নিবন্ধিত প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার জেলে ও অতিরিক্ত প্রায় ৯০ হাজার জেলে ইলিশ আহরণে অংশ নেবেন। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে প্রশাসন জেলেদের ওপর সর্বোচ্চ নজরদারি বজায় রেখেছে। নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে জাটকা আহরণের চেষ্টা করায় অনেক অসাধু জেলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন।
ভোলা জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ৫৪০টি অভিযান ও ৬০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় প্রায় ৫৪৭৯ লক্ষ মিটার জাল জব্দ করা হয় এবং নিলাম থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া জাটকা নিধনের অপরাধে ছয় জেলেকে কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং জরিমানা আদায় করা হয় ১.৫০ লাখ টাকা।
সরাসরি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ভোলা সদর, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার খাল, মাছঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় জেলে পরিবারগুলোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইলিশা ঘাটের জেলে শাহাজল মাঝি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা মেনে চললেও কিছু অসাধু জেলে নিয়ম ভঙ্গ করে, যার মাশুল দিতে হয় আমাদের।’
দৌলতখান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা বলেন, ‘এ বছর মেঘনায় জালমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশেষ চেষ্টা করা হয়েছে।’
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, ‘জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় জাটকা সংরক্ষণে সাফল্য এসেছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ইলিশ আহরণ হবে বলে আশা করছি।’ সরকারের এ প্রচেষ্টায় অভয়াশ্রমে বেড়ে ওঠা জাটকা ইলিশ এখন বড় হয়ে সাগরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। জেলেদের প্রত্যাশা, এবারের মৌসুম হবে ফলপ্রসূ।
মন্তব্য করুন