রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বহাল এবং বৈষম্য দূরীকরণসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ডিনস কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এসব দাবি জানান।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে এগ্রোনমি ও এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম জানান, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এর ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে এবং দীর্ঘ ১৫ বছরের গুম-খুন ও নির্যাতনের অবসান হয়। গণঅভ্যুত্থানে জনগণের প্রত্যাশা ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার অবসান এবং গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সেই প্রত্যাশা পূরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তবতাও প্রায় একই রকম। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন, যাতায়াত, পেশাগত সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন এবং দুর্নীতিবাজ ও নিপীড়কদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণে কার্যকর অগ্রগতি দেখা যায়নি। এসব জরুরি বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
তারা জানান, দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার ঘোষিত সুবিধা বহাল রয়েছে। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তা কার্যকর হয়নি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বাইরে কোনো বিচ্ছিন্ন অংশ নয়। তাই এখানেও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য একই ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় ৯ দফা দাবি জানান শিক্ষক-কর্মকর্তারা। এর মধ্যে রয়েছে—ক্যাম্পাসের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা; পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন; শিক্ষকদের জন্য ব্যক্তিগত চেম্বার এবং গবেষণার বাজেট বৃদ্ধি; শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা; অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কর্মরতদের সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সুবিধা; কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাপ্তরিক কাজের পরিবেশ উন্নয়ন; ফ্যাসিবাদী, দুর্নীতিবাজ ও নিপীড়কদের দ্রুত বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা।
এ সময় অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, পোষ্য কোটা ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা এক নয়। আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা চাই, পোষ্য কোটা নয়। আমাদের সন্তানরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই এখানে ভর্তি হোক এটা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমীরুল ইসলাম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান, কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
মন্তব্য করুন