নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় মাটি বিক্রির দ্বন্দ্বে ১৩ মামলার আসামি জাকির হোসেন নামে এক যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার (১২ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কোটবাড়িয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাকির হোসেন সোনাইমুড়ী উপজেলার ৮ নম্বর সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতেড়ী এলাকার হাসানপুর গ্রামের দূর্গা পাটোয়ারী বাড়ির রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি একই ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাকির আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আমলে প্রভাবশালী যুবলীগ কর্মী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। তাবলিগ শেষে মুখে দাঁড়ি রেখে কয়েক মাস আগে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকায় ঢোকেন। এরপর তিনি এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন। জাকের প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করতেন ১২০০ টাকা। একই এলাকার ল্যাংড়া নজরুল, তুহিন, সাদ্দামসহ ১০-১২ জন প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রি করেন ১৬০০ টাকা।
এ নিয়ে গত ৮/১০ দিন আগে প্রতিপক্ষের লোকজনের সঙ্গে তার বিরোধ শুরু হয়। এ নিয়ে দুদিন আগে জাকিরের মাটি কাটার ভেকু মেশিন পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর সোমবার দুপুরের দিকে মাটির দাম নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে তুলে নিয়ে যায় উপজেলার কোটবাড়িয়া এলাকায়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেখান থেকে পাঁচ ব্যক্তি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে পাশের বেগমগঞ্জ উপজেলার পলবান পোল এলাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে খাল পাড়ে মরদেহ ফেলে পালানোর সময় স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে দুজনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়।
নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের লোকজন তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। বিএনপির বাবু নামে একজনকে স্থানীয়রা আটক করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি আমার স্বামী মারা গেছে।
জানতে চাইলে অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, বিএনপি কোনো নির্যাতন, হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করে না।
তবে এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইসহাক খন্দকারের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ রেখে পালানোর সময় স্থানীয়রা দুজনকে আটক করেছে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী হাসপাতালে ভর্তি করে। মরদেহ একই হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, জাকির একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিল। তার বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় ডাকাতি, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ১১টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া বেগমগঞ্জ থানায় ডাকাতি, ছিনতাইসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
মন্তব্য করুন