সাভারের আশুলিয়ায় অবৈধ সিসা কারখানার তথ্য সংগ্রহ করে প্রশাসনকে জানানোয় এনসিপির শ্রমিক উইং ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে ৮ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজন বর্তমানে এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
বুধবার (১৪ মে) রাতে আশুলিয়ার শিমুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক রিফাত আহমেদ ইমন (২৭), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাভার উপজেলার যুগ্ম সদস্যসচিব তাওহিদুল ইসলাম ওরফে সানভি (২৩) ও জ্যেষ্ঠ সহমুখ্য সংগঠক হৃদয় হাসান (২৪), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাভার উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল ইসলাম (২৫), মুখপাত্র আল মাসুম ওরফে সজীব (২৬), সদস্য ফাহাদুল ইসলাম ফাহাদ (২৯), সিটি ইউনিভার্সিটির আহ্বায়ক সৈয়দ ইমন (২৪) ও সদস্যসচিব তাওহিদ আহমেদ ওরফে শান্ত (২৪)।
আহতরা জানান, বুধবার রাতে ব্যক্তিগত সফরে বেরিয়ে দুর্গন্ধের উৎস অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা শিমুলিয়া এলাকার একটি সীসা গলানোর অবৈধ কারখানার সন্ধান পান। পরবর্তীতে ভিডিও ফুটেজসহ বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে অজ্ঞাত নম্বর থেকে এক সাংবাদিক পরিচয়ধারী ব্যক্তি যোগাযোগ করেন। এরপরই একটি হায়েস গাড়িতে করে অস্ত্রধারীরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
চিকিৎসাধীন হৃদয় হাসান বলেন, হঠাৎ করে একদল লোক গাড়ি থেকে নেমে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা বলতে থাকে— ‘তোমরা এনসিপি? মুকুল সাহেবকে চেন না? তাহলে এখানে কেন এসেছো?’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুল ইসলাম মুকুলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং হামলার সময় তাকে ‘পরিচয় নিশ্চিত’ করার চেষ্টা করেন। পরে মুকুল ফোনে বলেন, ‘তারা আমাদের কেউ না, পরে দেখছি।’
আহত রিফাত আহমেদ ইমনের অভিযোগ, কারখানার লোকজন বলেছিল তারা মুকুল নামে এক এনসিপি নেতাকে টাকা দেয়। আমাদের কেন সমস্যা— এই প্রশ্ন তোলে। পরে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
তবে এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আসাদুল ইসলাম মুকুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। কেউ নাম ভাঙিয়ে থাকলে তার দায় আমি নেব না।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ সোহরাব হোসাইন কালবেলাকে বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই ওই অবৈধ কারখানাটি এলাকার পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা ফের চালু হওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মন্তব্য করুন