ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় টেন্ডার বা কোটেশন প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিনা টেন্ডারে গোপনে পছন্দের ঠিকাদারকে ১০ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের কাজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছেন।
স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ, পৌর কর্তৃপক্ষ অনৈতিক সুবিধা নিতে গোপনে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজটি দেওয়া হয়েছে টেন্ডার বা কোটেশন প্রক্রিয়া না করে। আলোচিত প্রকল্পটি আখাউড়া পৌরশহরের নারায়ণপুর বাইপাস এলাকায় ‘সৌন্দর্যবর্ধন’ নামে করা হচ্ছে। এতে ‘আই লাভ আখাউড়া’ লেখার পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ও দর্শনীয় স্থানের নাম উল্লেখপূর্বক দিক নির্দেশনা থাকবে বলে জানান পৌর কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভায় উন্নয়নমূলক কাজ করতে পত্রিকায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি বা পৌরসভার নোটিশ বোর্ডে কোটেশন প্রদর্শন করে ঠিকাদার আহ্বান করতে হয়। পরে বিধি অনুসরণ করে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু আখাউড়া পৌরসভার ১০ লাখ টাকার ‘সৌন্দর্য বর্ধন’ প্রকল্পে এ নিয়মনীতি মানা হয়নি। পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞপ্তি বা পৌরসভার নোটিশ বোর্ডে কোনো কোটেশন আহ্বান করা হয়নি।
পৌর কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, কোটেশনের মাধ্যমে কাজটি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার ইয়াছিন মোল্লার দাবি, তিনি কাজের মালামাল সরবরাহ করছেন। কাজ করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। জানতে চাইলে ঠিকাদার ইয়াছিন মোল্লা বলেন, অফিসিয়ালভাবে আমাকে কোনো কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। তবে, আমার কাছ থেকে রড, সিমেন্ট, বালুসহ মালামাল নিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি পিলারের ফাউন্ডেশনের ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের বাকি কাজ চলমান আছে।
আখাউড়া পৌরসভার নিয়মিত ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী ভূইয়া বলেন, আমি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ঠিকাদারি করছি। জানতে পেরেছি, পৌরসভায় ১০ লাখ টাকার একটি সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। যার কোনো টেন্ডার বা কোটেশন করা হয়নি। নোটিশ বোর্ডেও কোন বিজ্ঞপ্তি টানানো হয়নি।
রাসেল মিয়া নামে আরেক ঠিকাদার বলেন, আমরা কোনো ঠিকাদার জানি না কীভাবে কাজটি কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজকে দেওয়া হয়েছে। পৌরসভা কোটেশনও দেয়নি। যে ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে তিনিও বিতর্কিত।
আখাউড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. তানভীর হোসেন বলেন, সামনে বর্ষার মৌসুম আসতেছে। এ কারণে আমরা তাড়াতাড়ি আরপিও করে কাজটা শুরু করেছি। আরপিও করতে পত্রিকায় নোটিশ করতে হয় না। কাজটা কোটেশনের মাধ্যমে কেল্লা শহীদ এন্টারপ্রাইজকে দেওয়া হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক জি.এম. রাশেদুল ইসলাম বলেন, কাজটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে বিধায় ঠিকাদার পরিবর্তন করে দেব। আখাউড়ায় আমি নতুন এসেছি। বিতর্কিত কোনো ঠিকাদার এ রকম কাজ করতে পারবে না।
মন্তব্য করুন