ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। চমৎকার পরিবেশ ও আবহাওয়াকে সঙ্গে করে কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। খুশির মাঝে আবার মন খারাপের খবরও আছে। অসাবধানতাবশত সাগরে ডুবে বাবা-ছেলেসহ চার পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) কক্সবাজারের লাবনি, সুগন্ধা, কলাতলি পয়েন্ট, হিমছড়ি ঝর্ণা স্পট, বিউটি স্পট ইনানী ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকের আনাগোনায় মুখরিত এসব জায়গা। তবে সুগন্ধা, লাবনী ও কলাতলি পয়েন্টে লাইফগার্ড কর্মীদের লাল পতাকা উত্তোলন ও সতর্কতা মাইকিংয়ের প্রাণপণ চেষ্টাও আনন্দে আত্মহারা পর্যটকদের দমাতে পারছে না। সতর্কতা সংকেত বেমালুম উপেক্ষা করে সাঁতার না জানা অনেকেই উত্তাল সাগরে নেমে পড়ছেন। বৃষ্টিহীন কক্সবাজারে আবহাওয়া ভালো থাকায় ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক।
কুমিল্লা থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা নবদম্পতি মনির হোসেন কালবেলাকে বলেন, সকাল থেকেই বিচে আছি ভালোই লাগছে। অনেক মানুষ, ছবি তুলতে, স্বাভাবিক পথ চলতে সতর্ক থাকতে হচ্ছে। হোটেলের পরিবেশ খাবার-দাবার সবকিছু পজিটিভ।
ঢাকা সেনানিবাস এলাকা থেকে পরিবার নিয়ে আসা তারেক রহমান বলেন, ঈদের ছুটি কাটাতে এসেছি। আমরা ভাগ্যবান ওয়েদার অনেক ভালো। তবে সৈকতে ভাড়ায় খাটা এক ঘোড় সরওয়ারের আচরণ বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে।
বরিশাল থেকে আসা ফরিদা ইয়াসমিন জানান, দুদিন আবহাওয়া ভালো যায়নি, ঘোমট ভাব কেটে আজ চমৎকার পরিবেশ। কক্সবাজার হোটেল, খাবার মান সবই ভালো। ছেলেকে নিয়ে সাগর-সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করছি।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আওলাদ হোসেন কেনেডি বলেন, ঈদের আগেই কক্সবাজারের অধিকাংশ আবাসিক হোটেল শতকরা ৬০ ভাগ বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। এখন কক্সবাজারে শতভাগের কাছাকাছি রুম বুকিং চলছে। আগন্তুক পর্যটকের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
সৈকতের সিনিয়র লাইফগার্ড কর্মী মোহাম্মদ জহির বলেন, সমুদ্রে মৃত্যুর প্রধান কারণ অসতর্কতা। বিপদ সম্পর্কে না জেনে সাগরে নামলে বিপদ আসবেই। সাঁতার না জানলে কিংবা গর্তে পড়লে পানির স্রোতে যে কোনো সময় বিপদ আসতে পারে। এক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্তানন্দ দাশ কালবেলাকে বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসন, বিচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটি, লাইফগার্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও যৌথভাবে পর্যটকদের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করছি, মাইকিং করছি। আশা করছি পর্যটকরা বিপদ সম্পর্কে না জেনে সাগরে নামবেন না। এ ছাড়া কক্সবাজারের পর্যটন এলাকায় কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই।
মন্তব্য করুন