ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইউপি সচিব সোহাগ আলীকে হুমকি ও নারী উদ্যোক্তা রানি ইসলামকে গালাগাল করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কোলা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কালীগঞ্জ উপজেলার ৩ নম্বর কোলা ইউনিয়নের বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান ও এজাহারভুক্ত আসামি আলাউদ্দিন আল আজাদকে পরিষদের চিঠিপত্র ও প্রজেক্টসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানাতে হবে হুমকি দেওয়া হয়।
কোলা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ইউপি সচিব সোহাগ আলীর সঙ্গে কথা বলার সময়ের একটি ভিডিও কালবেলা প্রতিনিধির হাতে এসেছে। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলার সড়াবাড়িয়া এলাকার মাসুদ, পারিয়াট গ্রামের হারুণ, খড়িকাডাঙ্গা গ্রামের জহির ও পার্শ্ববর্তী জামাল ইউনিয়নের দুইজনসহ মোট ৫ জন পরিষদে আসেন। এ সময় ইউপি সচিব সোহাগ আলী সভা কক্ষের সামনে চেয়ারে বসা ছিলেন।
এ সময় মাসুদ নামে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘পরিষদের কাজ কী বন্ধ আছে, নাকি সব চলছে? জাফর মেম্বরের কোনো কার্যকলাপ এখানে চলবে না। কাজ-কাম যেখানে যাই হোক চিঠি আপনি চেয়ারম্যানের (আলাউদ্দিন আল আজাদ) কাছে দেবেন। এর বাইরে কোথাও যাবে না। এই কথার পরে আপনি হিসাব-কিতাব মিলিয়ে যদি ওই লাইনে কাজ করেন তাহলে আপনারও সমস্যা হবে, আর যারা এন্টিপক্ষ (প্রতিপক্ষ) ওদেরও সমস্যা হবে। এখন আর ছাড় দেওয়ার মতো কোন সুযোগ নেই। আপনি সরকারি চাকরি করতে এসেছেন। আপনার সাথে আমার কোনো খারাপ কথা বলার যুক্তি নেই।’
মাসুদ আরও বলেন, ‘মেম্বারদের কোনো কাজ এখন নেই, সব ঠান্ডা। আওয়ামী লীগের সময়ের চেয়ারম্যান যদি পরিষদে না আসতে পারে তাহলে মেম্বরদের তো কোনো কাজ নেই। চেয়ারম্যানের বাইরে কোনো কাজ যেন হয় না, তাহলে সমস্যা হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাসুদ হোসেন এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তিনি বিগত সময়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের হামলা করতে কোলা বাজারে প্রকাশ্যে দা নিয়ে মহড়া দিতেন। বরখাস্ত চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদের খুব আস্থাভাজন তিনি। এমনকি অস্ত্র মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন।
কোলা ইউনিয়নের নারী উদ্যোক্তা রাণী ইসলাম জানান, ‘মাসুদ, হারুণ ও জহিরসহ ৫ জন এসেছিল ইউনিয়ন পরিষদে। তারা এসে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিল। এ সময় তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। যা মুখে নেওয়া সম্ভব না। এ সময় তারা আমার হাতে থাকা ফোনও কেড়ে নেয়।’
কোলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সোহাগ আলী বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি এসেছিল। তারা সব চিঠিপত্র ও প্রজেক্টের ব্যাপারে বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানকে জানাতে বলেছে। না দিলে সমস্যা হবে। এছাড়াও তারা নারী উদ্যোক্তার সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেছে।
তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পর কোলা ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। সরকারি আদেশের বাইরে কিছুই করার নেই।’
এ ব্যাপারে জানতে মাসুদ হোসেনের মোবাইলে ফোন দিলেও তার কোনো সাড়া পাওযা যায়নি।
কোলা ইউনিয়নের প্রশাসক ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার মো. খাইরুল হক বলেন, ইউপি সচিব বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেদারুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ইউপি সচিবকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।’
মন্তব্য করুন