বগুড়ার নন্দীগ্রামে একই দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলাকালে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগের একজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় ছাত্রদল সভাপতিসহ আটজনের আহতের খবর পাওয়া গেছে।
ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ৩০ মিনিট ধরে চলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৬০ থেকে ৭০টি চেয়ার ভাঙচুর ও ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয়। এতে বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা ও সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নন্দীগ্রাম ফিলিং স্টেশন এলাকায় বিএনপির অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় চত্বরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভাস্থলে হামলা ও চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েত করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি, একজন গুলিবিদ্ধসহ তাদের দুজন আহত হয়েছেন। বিএনপির দাবি, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় তাদের দলের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। থানা পুলিশ উত্তেজিত পরিস্থিতি শান্ত করে ঘটনাস্থল থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে বঙ্গবন্ধু চত্বরে গিয়ে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়ে কৈগাড়ি মোড়ে বিক্ষোভ ও সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা করে বিএনপি। আহতরা হলেন- স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানা মুকুল (৪৫), ছাত্রলীগ নেতা গোলজার রহমান (২০), যুবদল নেতা আব্দুল কাইয়ুম (৩২), উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুয়েল রানা (২৬), পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরনবী (২৪)। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহত কয়েকজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা দাবি করেন, মিছিল চলাকালে তাকে লক্ষ্য করে পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়। আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুয়ায়ী শান্তি সমাবেশ চলছিল। আওয়ামী লীগের মিছিলটি মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতাকর্মীরা হামলা করে। এতে আওয়ামী লীগ নেতা গুলিবিদ্ধ এবং ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের অফিস চত্বরে নাশকতা ও সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল বলে দাবি করে আওয়ামী লীগ। তবে উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান তারেক দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করার ব্যাপারে তারা থানা পুলিশের কাছে ওয়াদাবদ্ধ ছিল। বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা ও সমাবেশ করার জন্য বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয় চত্বরে সভাস্থলে আসে। এসময় আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসীরা পিস্তল-লাঠিসোঁটা হাতে মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয় চত্বরে সভাস্থলে এসে হামলা করে। এতে উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ বেশকয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সরকার দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এ প্রসঙ্গে থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বাসস্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ এবং নন্দীগ্রাম ফিলিং স্টেশন এলাকায় দলীয় কার্যালয় চত্বরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভার প্রস্তুতি চলছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। আওয়ামী লীগের একটি মিছিল হঠাৎই বিএনপির অফিস চত্বরে প্রবেশ করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করে দুই দলের নেতাকর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন