গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে নানা আয়োজনে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। নিজ হাতে গড়া নন্দনকানন নুহাশপল্লিতে তার পরিবারের স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীরা মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ নানা আয়োজনে লেখককে স্মরণ করেন।
প্রতিবারের মতো এবারও শনিবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে তার পরিবারের সদস্য, ভক্ত, কবি-লেখক ও নাট্যজনরা ফুল হাতে লিচুতলায় শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করেন।
হুমায়ূন আহমেদের পাঠকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
নূহাশপল্লী ঘুরে দেখা গেছে, সকালে লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, দুই পুত্র নিনিত হুমায়ূন ও নিষাদ হুমায়ূন কবর জিয়ারত করেন। এ সময় শুভানুধ্যায়ী ও ভক্তরাও উপস্থিত ছিলেন। তার আত্মার শান্তি কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করা হয়। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে অংশগ্রহণে এ কোরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
হুমায়ূন আহমেদের লেখালেখি ও স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেন, তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই পেঙ্গুইন পাবলিকেশনস থেকে আমরা হুমায়ূন আহমেদের বই প্রকাশ দেখতে পারব। বিভিন্ন ভাষায় হুমায়ূন আহমেদের লেখা উপন্যাস অনুবাদ হচ্ছে। এটি আমার কাছে খুব বড় মনে হয়। তার লেখাগুলো বিশ্বে ছড়িয়ে যাক।
লেখকের প্রিয় চরিত্র হিমু ও রুপার অনুকরণে যথাক্রমে হলুদ পাঞ্জাবি ও নীল শাড়ি পরে আসেন ভক্ত ও পাঠকরা। তারা লেখকের প্রতি অতল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কথা জানান।
ভক্তরা বলেন, হুমায়ূন আহমেদ ৫০ বছর ধরে বাঙালি পাঠক সমাজকে আনন্দ দিয়েছেন। বাংলা ভাষা যত দিন থাকবে, ততদিন তার সাহিত্য পাঠ করা হবে।
বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে ততদিন হুমায়ূন আহমেদ পঠিত হবে বলে জানান অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ১৩ বছর পরও হুমায়ূন আহমেদ সমান জনপ্রিয়, ২১ শে বই মেলায় প্যাভিলিয়নে তা দেখা যায়। এছাড়া তার চলচ্চিত্র, নাটক, গান রয়েছে। আমি মনে করি, হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী জাতীয়ভাবে পালন হোক। শুধু হুমায়ূন আহমেদ নন, যারা লেখক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তাদের জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী জাতীয়ভাবে পালন করা উচিত। তাহলে আমাদের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল আরও সমৃদ্ধ হবে।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ। তার বাবা ফয়েজুর রহমান ও মা আয়েশা ফয়েজ। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। সৃষ্টিশীল কর্মের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের হৃদয়ে কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ চিরকাল বেঁচে থাকবেন বলে মনে করেন ভক্তরা।
মন্তব্য করুন