ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। ভবনের বিভিন্ন অংশে পলেস্তারা খুলে পড়ছে ও জানালা, ভেন্টিলেটরের কাচ ভেঙে গেছে। এ পরিস্থিতিতেও ঝুঁকি নিয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবাদান কার্যক্রম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ১৯৯৫ সালে নির্মিত ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটির ভেতরের যে কক্ষে ডাক্তার সেবাদান কার্যক্রম চালাতেন তা বন্ধ রয়েছে। বাহিরের অভ্যর্থনা কক্ষে টেবিল-চেয়ারে বসে চলছে সেবাদান। ভবনটির ছাদের ভিমে ফাটল, বিভিন্ন অংশে পলেস্তারা খুলে পড়েছে, ছাদ দেবে গিয়ে জানালা ও ভেন্টিলেটরের কাচ ভেঙে গেছে, যাতে ভবনটি ব্যবহারে জীবনের ঝুঁকিতে পড়েছেন চিকিৎসক ও রোগীরা।
সেবা নিতে আসা কয়েকজন জানান, এ ভবনে ঢুকতে তাদের খুব ভয় লাগে, চেষ্টা করি যত তাড়াতাড়ি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে ও ওষুধ নিয়ে এখান থেকে চলে যাওয়া যায়।
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রুনা খাতুন বলেন, ঘটনাটি প্রায় দুই মাসেরও বেশি আগের। বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস হচ্ছিল, এমন সময় জানালা ও ভেন্টিলেটরের কাচ ভেঙে পড়তে থাকে। আগত বেশ কয়েকজন রোগী ভয়ে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যান। তারা আমাদেরও রুম থেকে তাড়াতাড়ি বের হতে বলেন, আমরা বের হয়ে যাই। তারপর থেকে ভেতরের রুমে আর বসার সাহস করিনি।
তিনি আরও বলেন, রুমের মধ্যে বৃষ্টির পানি পড়ে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ওষুধ সামগ্রী ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। তবে যাই হোক, সেবাদান কার্যক্রম আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মির্জা সাইফুল ইসলাম আজম বলেন, চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ভবন যেভাবে ড্যামেজ হয়েছে তা ব্যবহার করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ভবনটি অনতিবিলম্বে সংস্কার খুবই জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এসএম ইফতেখার আজাদ কালবেলাকে বলেন, চরমাধবদিয়া ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটি যে ঝুঁকিপূর্ণ, সে বিষয়ে আমরা অবগত। এটি সংস্কারের জন্য আমাদের স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ বরাবর আবেদন জানানো হয়েছে, তারা ভবনটি সংস্কার করবে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ফরিদপুর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব বলেন, আবেদন আসার পর আমরা সেটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। অনুমোদন হয়ে এলেই ভবনটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।
ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, এ মুহূর্তে এখানে নতুন ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই, সংস্কারের জন্য পাঠানো আবেদনটি পাস হয়ে আসার পর ভবনটির সংস্কার কাজ করা সম্ভব হবে। বিষয়টি যেন দ্রুত করা যায় সেজন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ফরিদপুর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে আমি কথা বলব।
মন্তব্য করুন