কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি স্থিতিশীল থাকলেও দুর্ভোগ কমেনি ৩৫টি গ্রামের পানিবন্দি ৬০ হাজার মানুষের। দীর্ঘদিন পানির মধ্যে আটকে থাকায় দেখা দিয়েছে চরম খাদ্যসংকট, সুপেয় পানির অভাব ও গবাদি পশুর খাদ্যের সংকট।
পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের তথ্যমতে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি ১০ সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে ১২ দশমিক ৮৩ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। যা গত শনিবার বিকেল পর্যন্ত পানি না বাড়লেও বিপৎসীমার মাত্র ০.৮৮ মিটার নিচে ছিল। উপজেলার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩৫টি গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুই ইউনিয়নের ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১টি মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তলিয়ে গেছে চলাচলের রাস্তা, বন্ধ হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এদিকে পানির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পোকামাকড় ও সাপের উপদ্রব। এরই মধ্যে রাসেল ভাইপারের কামড়ে নুর ইসলাম (৩৪) নামে এক যুবক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পদ্মা তীরবর্তী ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নে নদীভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা হিসেবে সরকার এরই মধ্যে ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডলের মাধ্যমে ৫ টন ও চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের মাধ্যমে ১০ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শুকনো খাবার ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল বলেন, আমি ৫ টন চাল পেয়েছি এবং তা দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করেছি। পদ্মায় নতুন করে পানি না বাড়লেও দুর্ভোগ কাটছে না।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন, মানুষ বর্তমানে খাদ্য ও সুপেয় পানির চরম সংকটে রয়েছে। গবাদি পশুর খাবারেরও তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ১০ টন চাল বরাদ্দ পেয়ে তা বিতরণ করেছি।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী কালবেলাকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ২০ টন চাল পেয়েছি এবং তা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করছি। প্রয়োজন হলে বরাদ্দ বাড়ানো হবে।
মন্তব্য করুন