সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দেয়াল-পিলারে ফাটল, মেঝেও ধসে গেছে সৈয়দপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের

বৃষ্টির পানির তোড়ে ভেঙে গেছে সৈয়দপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি। ছবি : কালবেলা
বৃষ্টির পানির তোড়ে ভেঙে গেছে সৈয়দপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি। ছবি : কালবেলা

আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধিকাংশ ঘরই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এসব ঘরের দেয়াল, পিলারে ফাটল ধরেছে। ঘরের মেঝেও ফেটে ধসে গেছে। অনেক ঘরের ভিত্তি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। দরজা-জানালা ঠিকভাবে আটকানো যায় না। জরাজীর্ণ এসব ঘরে বাস করা নিয়ে নিরাপত্তার হুমকিতে রয়েছেন সুবিধাভোগীরা।

এমন দুরবস্থা নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের খোর্দ্দ বোতলাগাড়ী এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের।

আশ্রয়ণের বাসিন্দারা জানান, এরই মধ্যে অনেক পরিবার ঘর ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। এতে আশ্রয় পাওয়া এসব পরিবার আবারও আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছে। ঘর মেরামতে উপজেলা প্রশাসনে আবেদন জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৯টি আধাপাকা টিনশেড ঘর নির্মাণ করা হয়। একই বছরে সুবিধাভোগী প্রতি পরিবারকে দুইশতক জমিসহ একটি করে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। সুবিধাভোগীদের অভিযোগ, বরাদ্দের প্রায় আড়াই বছরেই ঘরগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা হয়েছে। ঘরের ভিত্তি দুর্বল হয়ে ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। দরজা-জানালা ঠিকমতো না লাগায় রাত যাপনে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা জান্নাতি বেগম ও নূরজাহান বেগম জানান, তাদের এবারসহ তিনবার ঘর ভাঙার ঘটনা ঘটল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ মেরামতে কোনো নজর দেয় না। তারাই কোনোমতে মেরামত করে বসবাস করছেন। তবে পুরোপুরি মেরামতের সামর্থ্য নেই। মেরামতের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে আবেদন করেছেন। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে তারা বসবাস করছেন।

ছোবরাতুন বানু, আরিফুল ইসলাম, মনোয়ারা খাতুনসহ কয়েকজন বলেন, প্রায় দুই বছর আগে ঘর বরাদ্দ পেয়ে এখানে এসেছি। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেই বাড়িগুলো প্রায় ধসে পড়ছে। বসবাস অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। বাড়ি নির্মাণে অনিয়ম করায় সামান্য বৃষ্টির পানির তোড়ে ভিত নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে।

প্রকল্পের বেহাল দশা সম্পর্কে একজন আবাসন প্রকৌশলী বলেন, বাড়ি নির্মাণের সময় ভিত্তি দেওয়া হয়েছে একেবারে যেনতেনভাবে। সিমেন্ট ও বালুর মিশ্রণেও ছিল অনুপাতের হেরফের। ফলে সামান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগেই বাড়িগুলো বসবাসহীন হয়ে যাচ্ছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলো নির্মাণ করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে। আর দেখভাল করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনৈতিক কারবারে প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে। আর এর খেসারত দিচ্ছেন বসবাসকারী সুবিধাভোগীরা।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু কালবেলাকে বলেন, ভিত্তিতে বালুমাটি থাকায় বৃষ্টির পানিতে বালু বের হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে খুবই খারাপ অবস্থা হতে পারে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মির্জা মো. আবু সাইদ বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী কালবেলাকে জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এনসিপির শাপলা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল ইসি

অমুসলিমরা কি মসজিদে প্রবেশ করতে পারবেন? যা বলছে ইসলাম

রাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় ৩ দিনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

এই শহরে বেঁচে থাকাটাই ভয়!

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শিরোনামহীনের ‘এই অবেলায় ২’

চটকধার বিজ্ঞাপন দেখে পার্লারে আসেন নারীরা, অতঃপর...

চবিতে বঙ্গবন্ধু চেয়ারে মুনতাসীর মামুনের নিয়োগ বাতিল, টাকা ফেরতের নির্দেশ

পুত্র সন্তানের বাবা হলেন তপু খান 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে পাকিস্তান আইএসপিআরের বিবৃতি

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিল ‘মেলিসা’, ধেয়ে আসছে ২৬০ কিমি বেগে

১০

একাত্তরকে সম্পত্তি বানিয়ে রাজনৈতিক শিল্পে পরিণত করেছে আ.লীগ : শিবির সভাপতি

১১

মেট্রোরেলের গতি কমল

১২

আফ্রিকার এক দেশে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

১৩

আগামীকাল বিদ্যুৎ থাকবে না জানিয়ে বার্তা

১৪

জামালপুরে জেলা ও দায়রা জজের আদালত বর্জন আইনজীবীদের

১৫

প্রস্রাবের পর শুধু টিস্যু ব্যবহার করলে নামাজ হবে?

১৬

শতবর্ষে নিভে গেল অভিনেত্রীর জীবনপ্রদীপ

১৭

খুমেকে সাংবাদিকের ওপর হামলা, প্রাণনাশের হুমকি

১৮

আসছে আমার নতুন অ্যালবাম ‘ভাল্লাগে না’

১৯

জাপানে ১ লাখ দক্ষ কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া জানাল প্রতিনিধি দল

২০
X