সিলেটের গোয়াইনঘাটে নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী রিয়াজুল ইসলাম ওরফে শুটার রিয়াজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে গোয়াইনঘাটের আলীর গ্রাম থেকে জনতার কাছ থেকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, গোয়াইনঘাটে সন্ত্রাসী রিয়াজুল ইসলামের অবস্থানের খবর পেয়ে তাকে খোঁজছিল করছিল র্যাব-১১ ও ৯ এর বিশেষ টিম। জাফলংয়ে তিনি মা, খালা, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে বেড়াতে আসেন। বুধবার স্ত্রীকে কিছু না বলে দুই শিশুকে নিয়ে বের হন রিয়াজুল। আগে থেকেই র্যাব-১১ এর কাছে তথ্য ছিল জাফলংয়েই আছেন রিয়াজুল। র্যাব ১১ এর বিশেষ টিম তামাবিল থেকে ধাওয়া করে তাকে।
আরও জানা গেছে, রিয়াজুল তামাবিল থেকে গোয়াইনঘাটের একটি গ্রামের পথ ধরে পালায়। পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে বুঝতে পেরে তিনি আলীর গ্রামের একটি বাড়ির বারান্দায় দুই শিশুকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দুই শিশুকে রেখে পালানোর চেষ্টা করলে গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়। উত্তেজিত জনতা তাকে আটক করে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ রিয়াজুল ও দুই শিশুকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। রিয়াজুলকে থানায় নিয়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আটক ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী রিয়াজ বাহিনীর প্রধান শুটার রিয়াজ।
গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী কালবেলাকে বলেন, শিশু অপহরণের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তেজিত গ্রামবাসীকে শান্ত করি। প্রথমে বিষয়টি ভুল-বোঝাবুঝি হিসেবে মনে করেছি। পারিবারিক কলহের কারণে দুই শিশু বাচ্চাকে নিয়ে তাদের বাবা গাড়িতে করে বেরিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। তবে থানায় যাওয়ার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।
তিনি আরও বলেন, র্যাবের ধাওয়া খেয়ে নিজের দুই শিশুকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তখন এলাকাবাসী শিশু অপহরণকারী সন্দেহে আটক করেন। তিনি স্ত্রীসহ জাফলংয়ে এসেছিলেন।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে রিয়াজুলের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে। সে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বলে জানা গেছে। তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে আসামি হস্তান্তর করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে চার সহযোগীসহ ‘শুটার’ রিয়াজকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। তখন র্যাব জানিয়েছিল, রিয়াজুল হত্যাসহ ১৫ মামলার আসামি। তিনি অন্তত ১৫টি সন্ত্রাসী দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও আশপাশের এলাকায় রিয়াজুলের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিলেন। তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে আছে জমি দখল, অবৈধ বালু ভরাট, মাটি কাটার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা।
মন্তব্য করুন