খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অনুপস্থিত চিকিৎসকের হাজিরা স্বাক্ষর করে ‘ভূত’

খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি : সংগৃহীত
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি : সংগৃহীত

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটেছে এক ‘ভৌতিক’ কাণ্ড। একজন চিকিৎসক হাসপাতালে নেই, অথচ হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে!

এ নিয়ে জনে জনে প্রশ্ন করেও কোনো সদুত্তর মেলেনি। তবে জেলা সিভিল সার্জন জানালেন, এর আগেও ওই চিকিৎসককে হাসপাতালে না পেয়ে শোকজ করা হয়েছিল।

অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক হলেন সহকারী ডেন্টাল সার্জন ডা. সুমনা আফরিন।

চিকিৎসকের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ সেবাপ্রত্যাশী ও এলাকাবাসী। স্থানীয় সেবাপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, ওই চিকিৎসককে প্রায়ই হাসপাতালে পান না তারা। বিশেষ করে বৃহস্পতি ও শনিবার। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত এক মাস প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে এর সত্যতা মিলেছে। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, তিনি উপস্থিত না থাকলেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, দাঁতের চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন বহু রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে হতাশ হয়ে ফেরেন তারা। অনেকেই বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক বা শহরের চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সেলিনা বেগমের মেয়ে দাঁতের সমস্যায় ভুগছে। কিন্তু দুই দিন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে পাননি তিনি। এ ঘটনায় কষ্ট পেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের দাঁতের ব্যথা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়েছিলাম, ডাক্তার পাইনি। আবার শনিবার গিয়েও ডাক্তার ছিল না। বাচ্চার কষ্ট হচ্ছে জন্য নিয়ে গেছি।’

অনুপস্থিত থাকার পরও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর রয়েছে উল্লেখ করে এই নারী বলেন, ‘এটা দেখে আমরা খুব কষ্ট পেয়েছি। এটা তো অন্যায়।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সুমনা আফরিন প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমার অফিসিয়াল ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কর্তৃপক্ষ যদি আমাকে ডেকে বলে, তখন আমি কথা বলব। বর্তমানে আমার কোনো সহকারী নেই, এতে আমি সমস্যায় পড়ি। তবে নিয়মিত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য যদি সিস্টেম চালু করা হয়, আমি করব।’ তবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘তার (ডা. সুমনা আফরিন) দুটি সন্তান আছে। তিনি ময়মনসিংহ থেকে এসে এখানে ডিউটি করেন। মাঝে মাঝে তাকে ক্যাজুয়াল লিভ দেওয়া হয়।’ হাজিরা খাতার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি খাতা দেখাতে গড়িমসি করেন এবং মন্তব্য করতে অসম্মতি জানান।

তবে দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. আসিফ ফেরদৌস কালবেলাকে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে অনুপস্থিত থাকার সুযোগ নেই। এর আগেও আমি তাকে (ডা. সুমনা আফরিন) না পেয়ে শোকজ করেছি। প্রমাণ পাওয়া গেলে আবারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বায়োমেট্রিক হাজিরা সিস্টেম চালু করা হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আগামী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ : আইজিপি

এনসিপির শাপলা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল ইসি

অমুসলিমরা কি মসজিদে প্রবেশ করতে পারবেন? যা বলছে ইসলাম

রাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় ৩ দিনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

এই শহরে বেঁচে থাকাটাই ভয়!

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শিরোনামহীনের ‘এই অবেলায় ২’

চটকধার বিজ্ঞাপন দেখে পার্লারে আসেন নারীরা, অতঃপর...

চবিতে বঙ্গবন্ধু চেয়ারে মুনতাসীর মামুনের নিয়োগ বাতিল, টাকা ফেরতের নির্দেশ

পুত্র সন্তানের বাবা হলেন তপু খান 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে পাকিস্তান আইএসপিআরের বিবৃতি

১০

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিল ‘মেলিসা’, ধেয়ে আসছে ২৬০ কিমি বেগে

১১

একাত্তরকে সম্পত্তি বানিয়ে রাজনৈতিক শিল্পে পরিণত করেছে আ.লীগ : শিবির সভাপতি

১২

মেট্রোরেলের গতি কমল

১৩

আফ্রিকার এক দেশে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

১৪

আগামীকাল বিদ্যুৎ থাকবে না জানিয়ে বার্তা

১৫

জামালপুরে জেলা ও দায়রা জজের আদালত বর্জন আইনজীবীদের

১৬

প্রস্রাবের পর শুধু টিস্যু ব্যবহার করলে নামাজ হবে?

১৭

শতবর্ষে নিভে গেল অভিনেত্রীর জীবনপ্রদীপ

১৮

খুমেকে সাংবাদিকের ওপর হামলা, প্রাণনাশের হুমকি

১৯

আসছে আমার নতুন অ্যালবাম ‘ভাল্লাগে না’

২০
X