রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪১ এএম
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্কুল মাঠের মাটি কেটে হচ্ছে শিশুপার্ক

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে স্কুলের খেলার মাঠের মাটি কাটায় তৈরি হয়েছে বিশাল গর্ত। ছবি : কালবেলা
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে স্কুলের খেলার মাঠের মাটি কাটায় তৈরি হয়েছে বিশাল গর্ত। ছবি : কালবেলা

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুই বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের মাটি কাটায় তৈরি হয়েছে বিশাল গর্ত। স্থানীয়দের অভিযোগ—ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজেরাই উপস্থিত থেকে মাটি কেটে নিয়েছেন। প্রশাসনের দাবি, পাশেই তৈরি হবে একটি মিনি শিশুপার্ক। কিন্তু মাঠের মাঝেই গভীর গর্ত আর ধসে পড়া মাটির কারণে এখন ঝুঁকিতে দুই স্কুলের ভবন।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রায় তিন সপ্তাহ আগে চর আষাড়িয়াদহের কানাপাড়া প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে মাটি কেটে অন্যত্র ফেলা হয়। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গর্ত এখন গভীর পুকুরে পরিণত। মাঠে খেলতে যাওয়া বাচ্চাদের জন্য এটি ভয়ানক বিপদ হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আঙ্গুর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘হঠাৎ করেই এত বড় গর্ত খোঁড়া হলো, মানুষ কিছুই জানে না। বাচ্চারা যে কোনো সময় পড়ে গিয়ে প্রাণ হারাতে পারে। দুই স্কুলের পাশে এই কাজ ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করেছে।’

চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব মো. সামিম জানান, ‘এরই মধ্যে এ গর্তে দুই শিশু পড়ে গিয়ে মৃত্যুমুখে পড়েছিল। স্থানীয়দের তৎপরতায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে তারা। তার আশঙ্কা, ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফতাব উদ্দিন জানান, তিনি ইউএনওকে অনুরোধ করেছিলেন অন্য জায়গা থেকে মাটি আনার জন্য। কিন্তু ইউএনও তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, পরে ভরাট করে দেবেন। এমনকি বলেছিলেন, ‘আমি ইউএনও বলছি। আমার ওপর ভরসা করতে পারছেন না?’

কানাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলীও একই অভিযোগ তুলেছেন। তিনি জানান, চেয়ারম্যান বলেছিলেন সরকারি কাজের জন্য মাটি প্রয়োজন। আপত্তি জানালেও শোনা হয়নি। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম বেশি গভীর হবে না। কিন্তু এখন আমার প্রতিষ্ঠানও ঝুঁকিতে।’

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম ভোলা অবশ্য ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘আমরা স্কুলের জায়গাতেই একটি শিশুপার্ক করছি। বন্যার কারণে অন্য কোথাও মাটি পাইনি। তাই সেখান থেকে মাটি তোলা হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক ও সবার সঙ্গে কথা বলেই করেছি। আমরা মাটি অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছি না।’ তিনি আরও দাবি করেন, মাটি তোলার সময় ইউএনও নিজে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ‘সেখানে একটি মিনি শিশুপার্ক তৈরি হবে। এজন্য খেলনা বসাতে মাটি ভরাট প্রয়োজন। বর্ষার কারণে কোথাও মাটি পাওয়া যায়নি। তাই ওখান থেকে মাটি নিতে বলা হয়েছিল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল মাঠ ভরাট করে দেব। কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব হয়তো বেশি গভীর করে ফেলেছেন। তবে বিষয়টি আমি দেখছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৯২ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক 

জেনে নিন আজকের স্বর্ণের বাজারদর

নতুন বিতর্কে পাকিস্তান, পেতে পারে কড়া শাস্তি

শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বজ্রবৃষ্টি ঝরতে পারে যেসব অঞ্চলে

রোগীদের কষ্ট হবে ভেবে মন্ত্রিত্ব পদ প্রত্যাখ্যান করেন নেপালের এক চিকিৎসক 

সপ্তাহের সেরা চাকরির বিজ্ঞপ্তি, পদ সংখ্যা ৩৮৭৯

ঝটিকা মিছিলের নামে এআই দিয়ে ব্যানার বদলের অভিযোগ বিএনপির

মুক্তি পেয়ে অবৈধ অস্ত্র কারবার শুরু করেছিলেন বুয়েটের সনি হত্যার আসামি 

আবারও মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান, ‘হ্যান্ডশেক’ নিয়ে কড়া নির্দেশ আইসিসির

রাকসু নির্বাচন : সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে লড়ছেন ভিপিসহ ২২ প্রার্থী

১০

দুর্গাপূজা এলেও পালপাড়ায় নেই মাটির পুতুল-ঘোড়া

১১

সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

১২

প্রেমিক মেনে না নেওয়ায় ৩ বছরের মেয়েকে পানিতে ফেলে হত্যা

১৩

বারবার চোখ চুলকানোর অভ্যাস কীসের লক্ষণ

১৪

বাবা হারালেন তারকা পেসার এবাদত হোসেন

১৫

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় যে ৯ খাবার, বাদ দিন এখনই

১৬

অসময়ে বাড়ছেই যমুনার পানি, প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল

১৭

বৃষ্টি ও তাপমাত্রা নিয়ে যে তথ্য জানাল আবহাওয়া অফিস

১৮

মাছের ঘের নিয়ে বিরোধ, প্রকাশ্যে আইনজীবীকে পিটিয়ে জখম

১৯

উপসহকারী প্রকৌশলী লিটন মল্লিক বরখাস্ত

২০
X