টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর দাবি নিয়ে আসা এক তরুণীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। পরে পরিবারের লোকজন ওই তরুণীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) উপজেলার হতেয়া রাজাবাড়ি ইউনিয়নের বাজাইল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী এই তরুণীর সঙ্গে উপজেলার বাজাইল গ্রামের আব্বাসের ছেলে রশিদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে রশিদ তার বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে ওই তরুণীকে বেড়াতেও নিয়ে যায়; কিন্তু বিয়ের পরে রশিদ স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ওই তরুণীকে ঘরে তুলতে নারাজ।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই তরুণী স্ত্রীর দাবি নিয়ে রশিদের বাড়িতে গেলে তার বাবা-মাসহ বাড়ির অন্যান্য লোকজন গাছের সঙ্গে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
এলাকাবাসী জানান, ওই তরুণীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন রশিদ এবং তার পরিবার। তবে এমনভাবে মেয়েটিকে নির্যাতন করা হয়েছে গ্রামে চোর ধরলেও এত নির্যাতন করা হয় না।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, রশিদ আমাকে বিয়ে করেছেন অথচ স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছেন না। যার কারণে আমি আমার স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে এসেছিলাম। আসার পর আমার স্বামী (রশিদ) এবং তার বাবা-মার সঙ্গে রশি এনে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। এরপর শুরু করেন আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন। এ ছাড়া আমার কাছ থেকে নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকারও নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, গাছে বেঁধে রাখার সংবাদ পেয়ে আমার বাড়ির লোকজন এবং স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে সখিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। যারা আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে তাদের যেন আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হয়, এটাই আমার দাবি।
অভিযুক্ত রশিদ বলেন, আমরা কোনো রশি দিয়ে বাঁধিনি। উনি নিজেই রশি এনে ফাঁস নিতে গিয়েছিলেন। উল্টো এই মেয়ের স্বজনরা আমাকে মেরে বস্তায় ভরে নদীতে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল। এই মেয়ের সঙ্গে আগে একদিন ঘুরতে গিয়াছিলাম সে সময় এ ঘটনা ঘটিয়েছিল। সেই সুবাদে এই মেয়ের নামে মামলা করছি।
রশিদের মা চন্দ্র ভানু বলেন, আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। এই মেয়ে আমাদের বাড়িতে এসে ফাঁস নিতে চেয়েছে। আমার ছেলেকে ফোন দিয়ে ঘুরতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে মেয়েটি আমার ছেলেকে ভয় দেখিয়ে উকিলের মাধ্যমে একটি স্বাক্ষর নেয়।
এ বিষয়ে সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কালাম ভুঞা বলেন, স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন