তিস্তা নদীর একমাত্র ফ্লাইড বাইপাস সড়কটির ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোনো সময় লালমনিরহাট-নীলফামারী একমাত্র যোগাযোগমাধ্যম ফ্লাইড বাইপাস সড়কটি পানির তোড়ে ভেঙে যেতে পারে। উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
রোববার (০৫ অক্টোবর) রাত ৯টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার)। যা বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে এদিন সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিন ঘণ্টার ব্যবধানে ১৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা গেছে, তিস্তা নদীর একমাত্র ফ্লাইড বাইপাস সড়কটির ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোনো সময় লালমনিরহাট-নীলফামারী একমাত্র যোগাযোগমাধ্যম ফ্লাইড বাইপাস সড়কটি পানির তোড়ে ভেঙে যেতে পারে। এতে করে তিস্তার পানি ইতোমধ্যে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা পাড়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে যেতে মাইকিং করেছে (পাউবোর) পানি উন্নয়ন বোর্ড। রোববার সকাল থেকে উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পেয়ে রাত ৯টায় বিপৎসীমা ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে চলাচলের রাস্তাঘাটসহ মানুষজন পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে।
অন্যদিকে তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতংকে পড়েছেন। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর, পাটগ্রাম উপজেলা দহগ্রাম, আদিতমারী উপজেলা চর গোবর্ধন, মহিষখোঁচা এবং সদর উপজেলা খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর এবং নিম্নাঞ্চলের এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।
তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টের পানির লেভেল পরিমাপক নুরুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৯টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপরে। রাতে পানি আরও বাড়তে পারে। তিস্তার নিম্নাঞ্চলের মানুষদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, বর্তমানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে এবং বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তার ফ্লাইড বাইপাস সড়কটির ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা পাড়ের মানুষদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন