জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর চাপ। হাসপাতালের শয্যা না পেয়ে অনেককে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে সাত শতাধিক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ভর্তি আছেন ৮৪ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে রোগীরা করিডোর ও মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পৌরসভার সবুজনগর মহল্লার ভবেশ চন্দ্র জানান, পূজার সময় ভবেশের মা সীতা রানী বেড়াতে এসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ভবেশের স্ত্রী ঝিলিক রানী বলেন, ‘আমাদের মহল্লায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কেউ না কেউ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন— কেউ হাসপাতালে, কেউ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
শহরের বাগিচা পাড়ামহল্লার রেহেনা বেগম দুই দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার স্বামী নাজমুল হক বলেন, ‘সোমবার রাত থেকে হঠাৎ করে পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ঘরে স্যালাইন খাওয়ানোর পরও না কমায় রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করি।’
সদর উপজেলার বম্বু গ্রামের আব্দুল কুদ্দস জানান, মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করে ডায়রিয়া শুরু হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হন। পাঁচবিবি উপজেলার ধুরইল গ্রামের মুক্তা রানীও তিন দিন ধরে ভর্তি আছেন।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৪৫টি হলেও মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভর্তি রোগী ছিল ৮৪ জন। তিন দিন আগে এই সংখ্যা ছিল ১৬৪ জন, আর দুদিন আগে ১০২ জন।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, পৌর এলাকার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী আসছে। পৌরসভা বা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা তৈরির জন্য মাইকিং করা জরুরি।
জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সরদার ডা. রাশেদ মোবারক কালবেলাকে বলেন, সবাইকে খাবার ও পানির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। নিরাপদ পানি পান করুন, প্রয়োজনে ফুটিয়ে নিন। বাইরের খাবার ও বাসি খাবার এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে মায়েরা সতর্ক থাকুন।
তিনি আরও জানান, জয়পুরহাট পৌরসভার সরবরাহকৃত পানিতে কোনো সমস্যা আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে পানি পরীক্ষার জন্য নমুনা বগুড়ায় পাঠিয়েছে, তবে রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন