খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হঠাৎ করেই কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে হাসপাতাল পরিচালক বরাবর ৮ দফা দাবি তুলে ধরে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোরে সার্জারি ওয়ার্ডের ইউনিট ১-এ এক পুরুষ রোগী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যর পরপরই রোগীর স্বজনরা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকের ওপর হামলা চালান। এর প্রতিবাদ ও নিরাপত্তার দাবিতে চার দফা দাবি তুলে ধরে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. শেখ আলামিন বলেন, ‘আমাদের সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
তিনি আরও বলেন, আমরা বারবার নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছি; কিন্তু প্রশাসন উদাসীন। দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় না আনা হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।
ডা. শেখ আলামিন বলেন, এর আগে একাধিকবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এদিকে কোনো পূর্বঘোষণা বা আলটিমেটাম ছাড়াই হঠাৎ কর্মবিরতিতে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
সপ্তাহের শেষ দিনে ধর্মঘটের কারণে ভর্তি রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। দুপুরের পর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অনুপস্থিত থাকায় হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। অনেক মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসায় জটিলতা দেখা যায় এবং নার্সদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খুমেক হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৬৪৩ জন।
চিকিৎসকরা জানান, তাদের ৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে পুলিশ অথবা আর্মড আনসার নিয়োগ দিতে হবে, নির্ধারিত শয্যার বাইরে রোগী ভর্তি হলে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হবে, সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, ইমার্জেন্সি অপারেশন থিয়েটারের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, স্থায়ী অ্যাকটিভ পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন উল্লেখযোগ্য।
অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন