

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচরের রিপন মোল্লা জন্ম থেকেই বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবুও জীবনের সঙ্গে লড়াই থামাননি তিনি। কারও দয়ার আশায় বসে না থেকে প্রতিদিন নিজ হাতে পরিশ্রম করে উপার্জন করেন। সারাদিন পালেরচর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন এই সংগ্রামী মানুষটি।
রিপনের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি আর আত্মসম্মানের গল্প সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাবেরী রায়ের। সংবাদটি দেখে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিপনের খোঁজ নেন।
প্রথমে ইউএনও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পালেরচর বাজারে রিপনের জন্য একটি দোকান নির্মাণ করবেন। কিন্তু রিপন জানান, প্রতিদিন বাজারে এসে দোকান চালানো তার জন্য শারীরিকভাবে কষ্টসাধ্য। পরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তার বাড়িতেই একটি দোকান নির্মাণ করে দেওয়া হয় এবং দোকান চালু করতে প্রয়োজনীয় সব মালামালও সরবরাহ করা হয়। বুধবার (২২ অক্টোবর) সেই দোকানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ইউএনও কাবেরী রায় নিজে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, ‘রিপন আমাদের সবার অনুপ্রেরণা। প্রতিবন্ধী হয়েও সে কারও কাছে হাত পাতেনি। প্রশাসন তার পাশে দাঁড়িয়েছে— এটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’
আরেকজন প্রতিবেশী সালমা বেগম বলেন, ‘রিপন নিজের পরিশ্রমে জীবিকা চালায়। ইউএনও ম্যাডাম দোকান করে দেওয়ায় এখন ওর জীবন আরও সহজ হবে।’
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী রায় বলেন, রিপনের গল্পটি জানার পর সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। সমাজে এমন মানুষই আসল অনুপ্রেরণা, যারা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়ে যায়। উপজেলা প্রশাসন সবসময় এমন আত্মপ্রত্যয়ী মানুষদের পাশে থাকবে, যেন তারা মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারে। মানুষের উদাহরণ হয়ে দাঁড়ানো এই রিপন মোল্লা এখন শুধু পালেরচরের নয়, গোটা জাজিরার গর্ব।
মন্তব্য করুন