

বরিশাল নগরীতে ১৮ বছর বয়সী গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলায় চার ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহা. রকিবুল ইসলাম ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির উপস্থিতিতে এ দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— বরিশাল নগরীর সাগরদী ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধানগবেষণা রোড এলাকার বাসিন্দা মানিক গাজী কালুর ছেলে রাসেল গাজী (৪৪), বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের আইয়ুব আলী খানের ছেলে নগরীর রূপাতরী গ্যাসটারবাইন এলাকার বাসিন্দা রোকন খান (৩২), রূপাতলী ধানগবেষণা রোড এলাকার খলিল জমাদ্দারের ছেলে রাজিব জমাদ্দার (৩৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে মো. জাহিদ হাওলাদার (৩৫)। তাদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রোকন খান পলাতক রয়েছেন। তারা চারজনই পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক ছিলেন।
তথ্য নিশ্চিত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আব্দুল মান্নান মৃধা কালবেলাকে জানান, আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ধর্ষিতার পরিবার। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছেন বলে বলে শুকরিয়া আদায় করেন তারা।
জানা যায়, গত ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর গৃহবধূ বাসা থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে বের হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। তিনি একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় উঠলে চালক তাকে অন্যত্র নিয়ে যায়। সেসময় তিনি চিৎকার দিলে আসামিরা তাকে মারধর করে। এ সময় ধর্ষিতা গৃহবধূ পানি খেতে চাইলে তার মুখে প্রস্রাব করে দেয় ধর্ষকরা। পরে নগরীর ত্রিশ গোডাউন সংলগ্ন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের খ্রিস্টানপাড়ার জঙ্গলে মধ্যে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরদিন সকালে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করেন।
এ ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী তরুণী নিজেই বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন কোতোয়ালি মডেল থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতাউর রহমান। আদালত ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চার ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
মন্তব্য করুন