

পাবনা পৌর সদরে ৯ বছরের শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় জড়িত আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হলো। এদিকে, ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বক্তব্য দেন নিহত শিশু শিক্ষার্থীর স্বজন ও এলাকাবাসী।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- পাবনা পৌর সদরের উত্তর শালগাড়িয়া সরদারপাড়া মহল্লার টিপু সরদারের ছেলে সাব্বির সরদার (২৬), ছবেদ আলীর ছেলে রমজান আলী (৩০) ও খালেক সরদারের ছেলে পান্না সরদার (২৮)। এদের মধ্যে সাব্বির ও রমজানকে রোববার (১৬ নভেম্বর) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর পান্নাকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তারা জড়িত সকল আসামিকে গ্রেপ্তারে থানা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয়। এ সময় প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে গিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
পাবনা সদর থানার ওসি (অপারেশন) সঞ্জয় কুমার সাহা কালবেলাকে বলেন, নিহত শিশুর মা বাদী হয়ে দুপুরে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত পান্না সরদার নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে পাবনা টেক্সটাইল কলেজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামিসহ তিন আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হলো। এর আগে ঘটনার দিন রাতেই সাব্বির ও রমজান নামের দুজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি (অপারেশন) বলেন, মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শিশু হাফসাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট একজন চিকিৎসকও জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে ভুক্তভোগী শিশুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখা শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান ও সাব্বির নামের দুজনকে আটক করা হয়।
মন্তব্য করুন