

কক্সবাজারের রামুর রাংকুট মহা বৌদ্ধবিহার পুণ্যার্থীদের কাছে তীর্থস্থান। অন্যদিকে দর্শনার্থীদের জন্য নৈসর্গিক মুগ্ধতার কেন্দ্রবিন্দু। দেশের পর্যটনশিল্পের নতুন সম্ভাবনা হয়ে উঠতে পারে এ রাংকুট মহা বৌদ্ধবিহার।
আড়াই হাজার বছরের পুরোনো দেশের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহাসিক বৌদ্ধবিহার হিসেবে পরিচিত এটি। আধুনিক নকশা ও শৈলীতে ইট-পাথরে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধবিহারগুলোর মধ্যে সম্রাট অশোক নির্মিত ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহার অন্যতম।
বিহারটি কক্সবাজারের রামু উপজেলার চৌমুহনী সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে রাজারকুল এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় আলো ছড়াচ্ছে ব্যাপক পরিসরে। বিহারটিতে রয়েছে রাংকুট জাদুঘর, প্রজ্ঞাবংশ ফ্লাইওভার, ইকো মেডিটেশন পার্ক, রাংকুট মিরাকেল গার্ডেন। তার পাশাপাশি সম্রাট অশোক, হিউয়েন সাঙ, ড. বি আর আম্মেদকরের ভাস্কর্যসহ দেশের সর্ববৃহৎ ১৫০ ফুট সিংহ শয্যা বুদ্ধ বিম্ব রয়েছে।
ঢাকা থেকে বিহারটি দেখতে আসা রবিউল হাসান বলেন, সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য পরিবার নিয়ে কক্সবাজার এসেছিলাম। গুগলে দেখলাম কক্সবাজার সদরের পাশের উপজেলা রামুতে এ বিহারটি রয়েছে। তাই পরিবার নিয়ে দেখতে আসলাম। দেখে ভালোই লাগছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ মোহাম্মদুল হক জনি বলেন, রামু পর্যটনশিল্পের জন্য অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। এখানে নৈসর্গিক প্রকৃতির পাহাড় সমুদ্র যেমন আছে। তেমনি রয়েছে থাই টেম্পলের আদলে নির্মিত বৌদ্ধ বিহার। এখানে সরকার যথাযথ নিরাপত্তা ও পৃষ্ঠপোষকতা করলে পর্যটন শিল্পের নতুন দিগন্ত সৃষ্টি হবে।
বিহারটির পরিচালক কে. শ্রী জ্যোতিসেন মহাথের বলেন, দেশের মাটিতে হাজার বছরের বৌদ্ধ নিদর্শন এ রাংকুট বনাশ্রম তীর্থস্থানে এসেছিলেন মহামতি গৌতম বুদ্ধ, চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েং সাংসহ অসংখ্য ঐতিহাসিক ব্যক্তিগণ। গৌতম বুদ্ধের বক্ষাস্থি সংবলিত এ রাংকুট বৌদ্ধ বিহারটির পরিবর্ধনে বাংলাদেশ সরকার যদি উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে বৌদ্ধ প্রধান দেশ থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, চীন, জাপান ও কোরিয়া থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী আগমন করবে। এতে দেশের যেমন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ হবে তেমন পর্যটনের ব্যাপকতা লাভ করবে।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, আজকে বিহারটি পরিদর্শন করলাম। বিহারটি আসলেই আমাদের দেশের জন্য সম্পদ। প্রায় ২৫০০ হাজার বছরের পুরনো ঐতিহাসিক বিহারটিকে ঘিরে কীভাবে দর্শনার্থীদের জন্য নিরাপত্তা জোরদার ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে আলোচনা করব।
মন্তব্য করুন